বেনাপোল ইমিগ্রেশনে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস সতর্কতা জারি
মনির হোসেন, বেনাপোল প্রতিনিধি ।। যশোরের বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগ এমপক্স (মাঙ্কিপক্স) সংক্রমণ রোধে রোববার (১৮আগস্ট) থেকে সতর্কতামূলক কার্যক্রম শুরু করেছে। ভারত ও বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর দেশে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
সংক্রমণের মাধ্যম ও প্রতিরোধমূলক নির্দেশনার বিভিন্ন লিফলেট সাঁটানো হয়েছে যাত্রী প্রবেশদ্বারে। ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য কর্মীদের পাশাপাশি কাজ করছেন পুলিশ সদস্যরা। যাত্রীরা বলছেন, আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হলে করোনার মতো এ ভাইরাসটিও মোকাবিলা সহজ হবে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল অফিসার মরিয়ম খন্দকার বলেন, এমপক্স ভাইরাসটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ায় সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশে চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ শুরু করেছে। সন্দেহভাজন যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়া সংক্রমণ রোধে যাত্রীদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত কাউকে পাওয়া যায়নি।
ভবিষ্যতে সংক্রমিত কাউকে পাওয়া গেলে তাকে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে স্বাস্থ্য বিভাগ। সবার সহযোগিতা পেলে যেভাবে করোনা ভাইরাস ব্যাপক হারে সংক্রমণ প্রতিরোধ সম্ভব হয়েছে, এই ভাইরাসও প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
আফ্রিকার দেশ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোয় প্রথম শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এমপক্স কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বুরুন্ডি, উগান্ডা, রুয়ান্ডা, সুইডেন, কেনিয়া ও পাকিস্তান। এমপক্স ছড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জানা গেছে, সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শ বা যৌনমিলনের মাধ্যমে, ব্যবহার করা কাপড়, সুই বা জিনিসপত্রের মাধ্যমে, সংক্রমিত প্রাণী শিকার করা, কাটা বা রান্না করার সময়, কম তাপমাত্রায় আক্রান্ত প্রাণীর রান্না করা মাংস খেলে এমনকি সংক্রমিত গর্ভবতী মায়েদের থেকে অনাগত শিশু এই ভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারে।
এই রোগে আক্রান্তদের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, ফোলা, পিঠে ও পেশিতে ব্যথা। আক্রান্ত ব্যক্তির একবার জ্বর উঠলে গায়ে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। সাধারণত মুখ থেকে শুরু হয়ে পরে হাতের তালু এবং পায়ের তলদেশসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে তা ছড়িয়ে পড়ে।
২০২২ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মাঙ্কিপক্সের নাম বদলে রাখে ‘এমপক্স’। গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে ২০২৩ সালের জানুয়ারির পর থেকে এখন পর্যন্ত ২৭ হাজার মানুষের এমপক্স শনাক্ত হয়েছে।
মারা গেছেন ১ হাজার ১০০ জনের বেশি। আক্রান্ত ও মারা যাওয়া ব্যক্তিদের বড় অংশই শিশু। প্রাথমিকভাবে এই রোগের প্রকোপ বানরের মধ্যে দেখা গেলেও এই রোগে মানুষও এখন সংক্রমিত হওয়ায় নাম পরিবর্তন করে এমপক্স রাখা হয়।
পাসপোর্টধারী দেবাশীষ চক্রবর্তী জানান, ভারত থেকে ফেরার সময় সংক্রমণ রোধে ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগ শারীরিক পরীক্ষা করছে। তবে সবাইকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
স/এষ্