বেনাপোল বন্দরে বৃষ্টির পানি কোটি কোটি টাকার মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত

বেনাপোল বন্দরে বৃষ্টির পানি কোটি কোটি টাকার মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত

মনির হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি ।। টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দরে কোটি কোটি টাকার পন্য পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারনে বন্দরের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বিপুল পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মালামালের মধ্যে রয়েছে আমদানিকৃত বিভিন্ন ধরনের কাগজ, টেক্সটাইল ডাইস, বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল, বন্ডের আওতায় গার্মেন্টসের আমদানিকৃত কাপড়, সুতাসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত কাঁচামাল।

বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, বন্দরের পাশে ছোট আঁচড়ার পানি নিস্কাশনের কালভার্টের নিচে বেনাপোল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ মাটি রেখে বন্ধ করে দেওয়ায় বন্দর এলাকার পানি নিস্কাশন হতে না পেরে বন্দর অভ্যন্তরে জমে ছিল। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে শুক্রবার রাতে কালভার্টের নীচে রাখা মাটি এস্কেভেটর দিয়ে সরিয়ে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়।

শনিবার সকালে বেনাপোল বন্দরের ৯, ১২, ১৩, ১৫, ১৬, ১৭,ও ১৮ গিয়ে দেখা গেছে টানা বর্ষার কারনে প্রতিটি শেডে বৃষ্টির পানি থৈ থৈ করছে। শেডের এনজিও ও শ্রমিকরা জগ, মগ, বালতি দিয়ে পানি নিস্কাশন করছেন। এসব শেডে রক্ষিত পণ্য বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে ৯ নং শেড।

পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় ৯ নম্বর শেডের ভিতরে প্রায় এক ফুট পানি ঢুকে নিচের সমস্ত মালামাল ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। নষ্ট হওয়া মালামালের মধ্যে অধিকাংশ বন্ডের মাধ্যমে আমদানিকৃত।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বন্দরের ড্রেনগুলো অধিকাংশ সময় ময়লা আবর্জনা জমে বন্ধ হয়ে থাকে। ফলে টানা তিন দিনের বৃষ্টির পানি বন্দর থেকে বের হতে পারেনি। এছাড়াও বন্দরের পাশে রেললাইনে নীচে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ পানি নিস্কাশনের কালভার্টের উপর মাটি রেখে দেওয়ায় পানি বের হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে পানি বের হতে না পেরে বন্দরের শেডের মধ্যে প্রবেশ করে।

এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী ও এ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, স্থানীয় বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে নানা অব্যস্থপনার কথা বলে আসলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ কোন কথা আমলে না নেওয়ার ফলে প্রায় শতাধিক আমদানিকারক সব হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। বীমা না থাকায় বন্দর কর্তৃপক্ষ কোন ক্ষতিপূরণ দেন না।

বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক রেজাউল করিম জানান, একটানা ভারী বৃষ্টির কারণে বেনাপোল স্থলবন্দরের অভ্যন্তরে জমে থাকা বৃষ্টির পানি সরানোর লক্ষে উর্ধতন মহলের সাথে কথা বলে শুক্রবার রাতেই বন্দরের পাশে ছোট আঁচড়ার কালভার্টের নিচে রেলওয়ের বন্ধ করে রাখা মাটি এস্কেভেটর দিয়ে সরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

বন্দরের পাশে রেলওয়ের লাইন সংলগ্ন ২টি কালভার্টের নিচের মাটি খননের মাধ্যমে ড্রেন করে বন্দর অভ্যন্তরের বৃষ্টির জমাটবদ্ধ পানি সরানোর ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া কয়েকটি শেডের মধ্যে ঢুকে পড়া পানি লেবারদের সহায়তায় সেচে বের করা হয়। বন্দর শেডের অভ্যন্তরে পানিতে ভিজে কোন কোন শেডের মালামাল ভিজে যায়।

স/এষ্