বৃষ্টিতে মোংলা সমুদ্র বন্দরে খালাস হচ্ছেনা গম ও সার

বৃষ্টিতে মোংলা সমুদ্র বন্দরে খালাস হচ্ছেনা গম ও সার

এস. এম সাইফুল ইসলাম কবির,বাগেরহাট ।। বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হওয়ায় টানা ভারী বৃষ্টিতে স্থবির হয়ে পড়েছে সাগর ও সুন্দরবন উপকূলের মোংলার জনজীবন। বুধবার (৩১জুলাই) রাত থেকে শুরু হওয়া মুষলধারে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে বৃহস্পতিবার (১আগষ্ট) বিকেল পর্যন্ত।

এতে মোংলা পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে দূর্ভোগ বেড়েছে মানুষের। ভারী বৃষ্টির কারণে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত অন্তত পাঁচটি জাহাজে বিদেশ থেকে আনা গম ও সার খালাস করা সম্ভব হচ্ছেনা। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বন্দরে আসা বাণিজ্যিক জাহাজের সংশ্লিষ্ট এজেন্ট এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার বিভাগ জানান, বৈরী আবহওয়ায় মোংলা বন্দরের পাঁচটি বিদেশি জাহাজ হতে খাদ্যপণ্য ও সার খালাস করা সম্ভব হচ্ছেনা। পণ্য খালাসের জন্য বন্দরে গম, সার, ক্লিংকার, গ্যাস ও মেশিনারিজসহ মোট ১২টি জাহাজ অবস্থান করছে।

এরমধ্যে দুইটি গমের ও তিনটি সারের জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করা সম্ভব হয়নি। অন্যান্য পণ্যের ক্ষতি হবেনা বলেই বাকি সাতটি জাহাজ থেকে বৃষ্টির মধ্যেও পণ্য খালাস চলছে।

মোংলা বন্দরে আসা লাইব্রেরিয়া পতাকাবাহী খাদ্যপণ্য গমের জাহাজ এম,ভি প্রটেক্টর এসটি রাফায়েল ও মার্শাল আইল্যান্ড পতাকাবাহী এম,ভি এলিন কারেজ জাহাজের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট রেনু শিপিংয়ের সহকারি ব্যবস্থাপক কাজী মাহাবুবুল হক শুভ জানান, গতত ১লা জুলাই মোংলা বন্দরের হাড়বাড়িয়ার-০৫ নম্বর বয়ায় ২১হাজার ৮০০মেট্টিক টন গম নিয়ে এম,ভি প্রটেক্টর এসটি রাফায়েল এবং ১৬জুলাই এম,ভি এলিন কারেজ ২২হাজার মেট্টিক টন গম নিয়ে হাড়বাড়িয়া-০৬ নম্বর বয়ায় অবস্থান নেয়।

সুন্দরবন সংলগ্ন পশুর নদীর জয়মনির ঘোল এলাকায় ‘মোংলা সাইলো’ নামে সরকারি খাদ্য গুদামে এই গম খালাস করা হচ্ছিল। কিন্তু বুধবার থেকে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় এই দুইটি জাহাজ থেকে গম খালাস বন্ধ রাখা হয়েছে।

এদিকে একই কারণে বন্ধ রয়েছে হংকং পতাকাবাহী এম,ভি গ্রেট ইন্টালিজেন্ট, লাইব্রেরিয়া পতাকাবাহী এম,ভি বাও ইয়াং ও পানামা পতাকাবাহী এম,ভি ফেডারেল ইবুকি জাহাজ থেকে ড্যাপ ও ইউরিয়া সার খালাসও। এমভি বাও ইয়াং জাহাজের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট ‘লিটমন্ড শিপিংয়ে’র ব্যবস্থাপক মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, গত ২৬জুলাই মরোক্ক থেকে ২৭হাজার ৬০০মেট্টিক টন সার নিয়ে মোংলা বন্দরে আসে জাহাজটি।

প্রায় অর্ধেক সার খালাস করার পর বুধবার রাতে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টির কারণে খালাস কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্য দুইটি জাহাজেও সার খালাস বন্ধ রাখা হয়েছে জানিয়ে সংশ্লিষ্ট শিপিং এজেন্টের প্রতিনিধিরা বলেন, এতে করে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক মোঃ মাকরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ৩, ৪ ও ৫ নম্বর সতর্ক সংকেতের সময়ও বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিকসহ অবস্থান করা জাহাজে পণ্য খালাস বোঝাইয়ের কাজ চলমান থাকে।

তবে ভারী বৃষ্টির সময় জাহাজে থাকা খাদ্য পণ্য নষ্ট হওয়ার শংকায় সংশ্লিষ্ট আমদানিকারক ও জাহাজের শিপিং এজেন্টরা পণ্য খালাস কাজ বন্ধ রাখেন। তবে এই সময় মেশিনারিজ, ক্লিংকার, গ্যাস ও কন্টেইনার পণ্য খালাস কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।

স/এষ্