মাধবপুরে পোল্ট্রি মুরগীর বর্জ্রের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী, মুখ লুকিয়েছে প্রশাসন
এম এ কাদের, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।। হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর পৌরসভার কাটিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাকের ডগায় বয়লার মুরগীর বর্জ্র ফেলে পথচারী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ছাত্র ছাত্রী ও এলাকাবাসী দুর্গন্ধের জন্য অতিষ্ঠ হয়ে জন জীবন কাটাচ্ছেন।
ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষকা রিপাত আরা বেগম জানান, দুষিত, দুর্গন্ধ, পচা গন্ধের জন্য ক্লাসের জানালা বন্ধ করে ছাত্র ছাত্রীদের ক্লাস করা হয়। আমার শিক্ষকরাও ঠিক মত ক্লাস করাতে পারছেনা দুর্গন্ধের জন্য।
এই বিষয়ে স্কুল কমিটির সাথে (১৫ জুলাই) কথা বলেছি। দেখা যাক কোন সমাধান আসে কি না। যদি কোন সমাধান না আসে, তারপর আমি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহযোগিতা নেব।
আর অন্যান্য শিক্ষিকা ও ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে জানায়ায়, প্রায় এক সপ্তাহ যাবত এই দুর্গন্ধের শিকাড় হচ্ছে ছাত্র শিক্ষক। কোন কোন ছাত্র ছাত্রী দুর্গন্ধ সইতে না পেরে মুখে মাক্স ব্যবহার অতি কষ্টে ক্লাস করে যাচ্ছে।
তাছাড়া ঐ স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা জানায়, আমরা রাস্তা দিয়ে স্কুলে আসার সময় দুর্গন্ধের জন্য খুবই কষ্ট পোহাতে হয়। আমরা দুষণ মুক্ত পরিবেশে লেখা পড়া করতে চাই।
সোনাই নদীর পাড় ঘেঁষে মাধবপুর বাজারের রাস্তাটি কাটিয়ারার দিকে রয়েছে। ঐ রাস্তার পাশে রয়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের দোকান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিনিয়ত চলাচলকারী নারী পুরুষরা বলেন, ঐ রাস্তাটিতে দুষিত দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে যাচ্ছে বয়লার মুরগী ব্যবসায়ীরা৷
শুধু তাই নয়, সোনাই নদীর পানি ও পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে এই বর্জ্রের কারনে। মাধবপুরের পৌর মেয়রসহ প্রশাসনের প্রতি আমাদের বিশেষ অনুরোধ রইল “আমাদের বাঁচান, নদীকে বাঁচান, আমাদের পরিবেশ’কে বাঁচান, আমাদের স্কুল পরোয়া ছাত্র ছাত্রীদের’কে বাঁচান”।
পরিশেষে এলাকার সচেতন মহলের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ খুব দ্রুত তার অবসান ঘটিয়ে আমাদের’কে দুষিত পরিবেশ থেকে মুক্ত করবেন।
বাজারের বর্জ্র ফেলেনকারী বয়লার মুরগী ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বললে, তারা বলেন- পৌরসভার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য বর্জ্র নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্হা না থাকার কারনে নদী নালা ছাড়া বর্জ্র ফেলা আর কোন বিকল্প নেই। যদি মেয়র মহোদয় আমাদের ময়লায় ফেলার ডাস্টবিন বা কোন নিদিষ্ট স্হানের ব্যবস্হা করেন, তাহলে আমরাও পরিবেশ দুষণ থেকে বাঁচতে পারি।
কাটিয়ারা ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিশ্বজিত চন্দ্র দাস বলেন, আমি বেশ কয়েক বার তাদেরকে নিষেধ করেছি, বয়লার মুরগীর বর্জ্র সোনাই নদী ও কাটিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশপাশে না ফেলতে কিন্তুক তারা কোন কথাই মানছেন না। বিষয়টি নিয়ে খুব দ্রুত মেয়েরসহ প্রশাসনের সহযোগিতা নিব, যাতে করে পরিবেশ দুষণ মুক্ত করা যায়।
অন্যদিকে সদরের ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, পৌরসভার নিয়োজিত বর্জ্র পরিষ্কার কর্মিদের গাড়ির মাধ্যমে বর্জ্র নেওয়ার ব্যবস্হা রয়েছে।
এবং বাজারের অনেক ব্যবসায়ী তা করে থাকেন। কিন্তুক সোনাই নদী সংলগ্ন ব্যবসায়ীরা বয়লার মুরগীর বর্জ্র নদী ও স্কুলের আশপাশে ফেলে যাচ্ছে বলে শুনতে পেয়েছি। এই বিষয়ে মেয়রের সাথে খুব দ্রুত কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সহযোগিতা করব।
মাধবপুর পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান মানিক এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, যদি এধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়ে থাকে, আমি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব। বিষয়টি খুবই দুঃখ জনক। আমি খোঁজ খবর নিয়ে বিষয়টির জন্য প্রয়োজনী ব্যবস্হা নিব।
মাধবপুর প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তারা ডা. মোঃ আব্দুস সাত্তার বেগ এর সাথে যোগাযোগ করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাধবপুর বাজারের পোল্ট্রি ও বয়লার মুরগ ব্যবসায়ীরা পৌরসভার মেয়রের কাছ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করার সুবাদে আমাদের পক্ষ থেকে কোন আইনি প্রক্রিয়া গ্রহন করা সম্ভব হয় না।
বিষয়টি যেহেতু আমি অবগত হয়েছি আপনার মাধ্যমে, নিশ্চয় আমি মেয়েরের সাথে কথা বলব।
এবং পানি দুষণের বিষয়টি আমি সরজমিনে পরিদর্শন করব। এসাথে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যথা যথা চেষ্টা করব। বর্জ্র ফেলে পরিবেশ দূষণের অভিযোগ পাওয়া গেলে। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
এই বিষয়ে মাধবপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এ.কে.এম. ফয়সালের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে ঐ সময় কোন ফোন কল রিসিভ হয়নি।
স/এষ্