বদলগাছীতে কোলা-হাটের অফিসে হামলা, ভাংচুর-ইজারাদারকে মারধোর-টোল আদায়ের টাকা লুটের অভিযোগ

বদলগাছীতে কোলা-হাটের অফিসে হামলা, ভাংচুর-ইজারাদারকে মারধোর-টোল আদায়ের টাকা লুটের অভিযোগ

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি।। নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার কোলা ইউনিয়নের কোলাহাটের কার্যালয়ে হামলা,ভাংচুর, হাট ইজারাদারসহ তার লোকজনকে মারধোর করে হাটের টোল আদায়ের টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছে একাধিক ছাগল-বেপারির বিরুদ্ধে।

হামলার ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি সবার নজরে আসে।

এ ঘটনায় দূর্বৃত্তরা হাটের অফিস কক্ষের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে আসবাবপত্র ভাঙচুর, ইজারাদারের উপর হামলাসহ হাটের টোল আদায়ের টাকা লুট করে নিয়ে যায় এমন দাবি তুলেছেন হাট ইজারাদার।

শুক্রবার (৫ই জুলাই ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এই অর্তকিত হামলার ঘটনা ঘটে।

অভিযোগও স্থানীয় সুত্রে জানাযায়,উপজেলার কোলা ইউনিয়নের বৃহৎ কোলাহাটে গত ৫ই জুলাই শুক্রবার বিকেলে ছাগলহাটিতে এক কৃষকের সাথে ছাগল কেনা নিয়ে বিরোধ বাঁধে এক ছাগল ব্যবসায়ীর।

তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে আক্কেলপুর উপজেলার গনিপুর এলাকার গোলাপ নামের ঐ কৃষককে বেধড়ক মারপিট করেন স্থানীয় ছাগল ব্যবসায়ী হারুন ও তার ছেলে। কৃষককে মারধোরের ঘটনায় সন্ধ্যায় হাটের অফিস কক্ষে বিষয়টি আপোষ মিমাংসার লক্ষে দুই পক্ষ কে নিয়ে সালিশে বৈঠকে বসেন স্থানীয় মাতব্বর সহ হাট-ইজারাদার।

সালিশি বৈঠক চলাকালে হঠাৎ ছাগলব্যবসায়ীরা উত্তেজিত হয়ে হাটের অফিস কক্ষের ভিতর থেকে বাহিরে এসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এসময় ছাগল ব্যবসায়ীরা দলবদ্ধ হয়ে রড, লাঠিসোঁটা, দেশিয় অস্ত্র,দিয়ে হাটের অফিসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর, ইজারদারসহ তার লোকজন কে মারপিট করে হাটের টোল আদায়ের ব্যাগ ভর্তি টাকা ছিনিয়ে নিয়ে অন্যত্র চলে যায় ছাগল বেপারীরা এমনটাই জানান অভিযোগকারী।

এঘটনায় হাট ইজারদার ফেরদৌস বলেন, শুক্রবার এক কৃষককে বেধড়ক মারপিট করে কতিপয় ছাগল ব্যবসায়ী, দুই পক্ষকে নিয়ে বিষয়টি আপোষ মিমাংসার জন্য ঐ দিন সন্ধ্যায় স্থানীয় মাতব্বরদের নিয়ে বসা হয়।

একটি প্রভাবশালী মহলের ইশারায় হঠাৎ নন্দাহারের হারুন,সিজার, রাসেল, সুমন, মুকুল নামের বেশকিছু ছাগল ব্যবসায়ীসহ ২৫/৩০জন লোক দলবদ্ধ হয়ে আমার হাট অফিসে অর্তকিত হামলা চালায়।

হামলা করে আমাকে এবং আমার হাটের শেয়ারদার রফিকুলএবং তার ছেলে রনিসহ আমার বেশ কিছু লোকজনকে মারপিট করে, হাটের অফিস কক্ষ ভাংচুর করে টোল আদায়ের ব্যাগ ভর্তি সমস্ত টাকা তারা লুট করে নিয়ে যায়।

অপর ভুক্তভোগী গোলাপ বলেন, আমি শুক্রবার কোলা বাজারে একটি ছাগল কিনতে গিয়েছিলাম, বেপারিরা একটা ছাগলের দাম করেছিল ১৫হাজার টাকা আমি সেটা জানতাম না,পরে সেই ছাগলের দাম আমি ১৬হাজার টাকা করেছি আর এটাই আমার অপরাধ! কেন সেই ছাগলের দাম আমি বেপারির চাইতে বেশি বলেছি তার জন্য আমাকে ছাগলের বেপারি বেধড়ক মারপিট করেছে। আমি বদলগাছী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরি।

কোলা আদর্শ বিজলি ক্লাবের সাধারন সম্পাদক সুজাউল ইসলাম কুদ্দুস বলেন, ঘটনার দিন আমি কোলাতে ছিলাম না-আমার ছেলেকে নিয়ে নওগাঁতে ছিলাম,শুনেছি আমাকে নাকি হুকুমের আসামী করা হয়েছে এবং কোলা ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নেতা শাহীনকে ও মামলায় জড়ানো হয়েছে।

হামলার ঘটনার সময়ের ভিডিও ফেইসবুকে ভাসছে যারা ঘটনার সাথে জড়িত তাদের ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সেখানে কিন্তু আমাকে দেখা যাচ্ছেনা-শাহীনকে ও দেখাযাচ্ছেনা। আমি ঐ ঘটনার সাথে কোন ভাবেই জড়িত নয়।

এঘটনায় অন্যান্য বিবাদীরা পলাতক থাকায় বিবাদীর সাথে মুটোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী হোসেন আলী জানান, ঘটনার দিন বেশ কিছু ছাগলব্যবসায়ীরা হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে হাটের অফিস ঘরে হামলা করে আসবাবপত্র ভাংচুর করে। হাটইজারাদারসহ তার বেশ কয়েকজনকে মারধোর করে এবং হাটের টোল আদায়ের টাকার ব্যাগ লুটকরে নিয়ে যায় ছাগলব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় আজান,রবিউল সহ আরও অনেকে জানান,শুক্রবার সন্ধ্যারপর ননন্দাহার এলাকার কতিপয় ছাগল-ব্যবসায়ীরা হঠাৎ হাট অফিসে হামলা করে, ইজারদারের লোকজনকে মারধোর করে দরজা ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে।

কোলাবাজার বণিক-সমিতির সাধারন সম্পাদক লিটন বলেন,কোলাহাটের অফিসে হামলা, ভাংচুরের ঘটনাটি শুনেছি, আমাদের কেউ অভিযোগ দিলে বিষয়টি আমরা সুষ্ঠু ভাবে নিরসনের চেষ্টা করবো।

আর যদি হাটমালিক আইনের আশ্রয় নেন সে ক্ষেত্রে প্রকৃত পক্ষে যারা দোষী তাদের ব্যবস্থা প্রশাসন নিবেন আর এ ঘটনায় সাধারন কোন ব্যাক্তি যেন ঝামেলায় না পড়েন এমনটাই আমি আশা করছি।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান বলেন, পুলিশ আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

স/এষ্