ভারতের সব টিকা উৎপাদনকারী সংস্থাকে আইনি সুরক্ষাকবচ দেওয়ার পক্ষে সেরাম

ভারতের সব টিকা উৎপাদনকারী সংস্থাকে আইনি সুরক্ষাকবচ দেওয়ার পক্ষে সেরাম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতে ফাইজার, মডার্নার পথে হাঁটলো এবার পুনের সেরাম ইনস্টিটিউট। তাদের দাবি, শুধু বিদেশি নয়, ভারতের সব টিকা উৎপাদনকারী সংস্থার জন্যও যেন একই নীতি নেয় দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। ক্ষতিপূরণের দায় থেকে যেন সবাইকে রেহাই দেওয়া হয়। অর্থাৎ, টিকা নিয়ে কেউ অসুস্থ হলে ভ্যাকসিন কোম্পানির কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে কেউ যেন মামলা করতে না পারে।

 

সেরাম ইনস্টিটিউট–এর একটি সূত্র জানিয়েছে, শুধু তাদের সংস্থা নয়, ভারতের সব টিকা উৎপাদনকারী সংস্থাকে আইনি সুরক্ষাকবচ দেওয়ার পক্ষে সেরাম। প্রতিষ্ঠানটি চাইছে, যদি বিদেশি সংস্থাগুলোকে এই সুবিধা দেওয়া হয়, তাহলে ভারতের দেশীয় সংস্থাকেও একই সুযোগ দেওয়া হোক। ‌সেরাম–এর প্রত্যাশা, নীতি সবার জন্য একই হবে।

 

অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিশিল্ড ভারতে উৎপাদন করছে পুনের সেরাম ইনস্টিটিউট। পাশাপাশি আরও তিনটি কোভিড টিকার ট্রায়াল চালাচ্ছে তারা। ওষুধ উৎপাদনকারী সংস্থা নোভোভ্যাক্সের সঙ্গে মিলে কোভোভ্যাক্স তৈরি করেছে আদর পুনাওয়ালার সংস্থা। তার ট্রায়ালও চলছে। কোডাজেনিক্স নামে নোজাল টিকার প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চালাচ্ছে যুক্তরাজ্যে। এই টিকা একটি নিলেই চলবে। স্পাইবায়োটেক নামে আরও একটি কোভিড টিকার ট্রায়ালও চালাচ্ছে তারা।

 

ভারতে আপাতত কোভিড টিকা তৈরি করছে সেরাম ইনস্টিটিউট এবং ভারত বায়োটেক। এই দুইটি সংস্থাকে এখনও পর্যন্ত ক্ষতিপূরণের দায় থেকে ছাড় দেওয়া হয়নি। যদিও বুধবার ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, তারা ফাইজার ও মডার্নাকে এই সুবিধা দিতে প্রস্তুত। তারপরই সবার জন্য সমনীতির দাবিতে তুলেছে সেরাম।

 

এমন সময়ে সংস্থাটির পক্ষ থেকে এমন দাবি তোলা হলো যার কদিন আগেই সেরাম ইন্সটিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আদর পুনাওয়ালার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন লখনৌয়ের এক বাসিন্দা। ওই ব্যক্তির অভিযোগ, সেরামের উৎপাদিত করোনার ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড নেওয়ার পরও তার শরীরে কোনও অ্যান্টিবডি তৈরি হয়নি।

 

লখনৌয়ের আশিয়ানা থানায় অভিযোগ দায়ের করা ওই ব্যক্তির নাম প্রতাপ চন্দ্র। থানায় দায়ের করা অভিযোগে তিনি বলেছেন, ৮ এপ্রিল তিনি কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন। ২৮ দিন পর তার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার কথা ছিল। সেই ডোজ নিতে তিনি কেন্দ্রে যান। সেখানে তাকে জানানো হয়, প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের মধ্যে সময়সীমা ছয় সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। পরে ওই সময় ১২ সপ্তাহ বাড়ানো হয়।

 

অভিযোগে তিনি দাবি করেন, টিকা নেওয়ার পর থেকেই তিনি সুস্থ বোধ করছিলেন না। সরকার অনুমোদিত পরীক্ষাগারে তিনি অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করান। কিন্তু তার শরীরে কোনও অ্যান্টিবডি তৈরি হয়নি। বরং তার প্লাটিলেট কমে গেছে।

 

প্রতাপ চন্দ্র সেরামের সিইও আদর পুনাওয়ালা ছাড়াও ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া, ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল, আইসিএমআর-এর প্রধান বলরাম ভার্গব এবং জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের প্রধান অপর্ণা উপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেছেন।

 

পুলিশ অভিযোগটি গ্রহণ করেছে। কিন্তু কোনও এফআইআর দায়ের করা হয়নি। পুলিশ বলছে, বিষয়টি স্পর্শকাতরতা বিবেচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার আগে শীর্ষ কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সেরামের দায়মুক্তির দাবি তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে প্রতীয়মান হচ্ছে।এস/এ