বিএনপি পথ হারিয়ে পদযাত্রা শুরু করেছে:ওবায়দুল কাদের

বিএনপি পথ হারিয়ে পদযাত্রা শুরু করেছে:ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি পথ হারিয়ে এখন পদযাত্রা শুরু করেছে। তিনি বলেন, পদযাত্রার মধ্য দিয়ে বিএনপির আন্দোলনের মরনযাত্রা শুরু হয়েছে।

সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্য, অপরাজনীতি ও অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে শান্তি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মানুষের মনের জোর যখন কমে যায়, তখন গলার জোর বেড়ে যায়। ফখরুলের গলার জোর বেড়ে গেছে। ছিল বিক্ষোভ কর্মসূচি। এখন নিরব কর্মসূচি কেন। ফখরুল সাহেব বিক্ষোভ অনেক করেছেন। আর না। এখন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন। আসুন খেলি। খালি মাঠে খেলবো না। খেলা হবে। ফখরুল সাহেব অনেক আওয়াজ দিয়েছেন। এখন আওয়াজ নেই। ধীরে চলুন। নরম তো হয়ে গেছে সুর। ডোনাল লু ঢাকায় এসেছিলেন, বিএনপি ভেবেছিল, তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে। ভেবেছিলেন সরকারকে চাপ দেবে। ভেবেছিল নিষেধাজ্ঞা দেবে। নিষেধাজ্ঞাও আসবে না মনও ভালো হবে না। ডোনাল লু থেকে হতাশ হয়ে ফখরুল ও আব্বাস এভারকেয়ার হাসপাতালে। আপনাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পছন্দ নয়, শেষ পর্যন্ত গোলাপবাগ গরুর হাটে গিয়ে সমাবেশ করলেন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা পালাননি। আমরাও পালাইনি। ১/১১ এর সময় ফখরুল সাহেব কোথায় ছিলেন। জেলে ছিলেন, না বাইরে ছিলেন। ওই সময় বাইরে থাকা মানে দাদালি করে থাকা। কিন্তু শেখ হাসিনা পালিয়ে যাননি। ফখরুল সাহেব আমার কথাগুলো কান পেতে শুনুন। সব এয়ালাইন্সে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলো, তারপরেও শেখ হাসিনা দেশে এসেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমাকে যেতে না দেওয়া হলে আমি বসে পরলাম। আমি দেশে যাবো। ১/১১ এ পালানোর গল্প তো আপনাদের। আপনার নেতা পালিয়ে গেল সেই টেমস নদীর পাড়ে। সেই যে গেলো আর এলো না। ফখরুল সাহেব রিমোট কন্ট্রোলে চলছে। রিমোট কন্ট্রোলে চলে ক্ষমতায় যাওয়া যাবে না। আপনাদের রাজনীতি ভুলের চোরাবালিতে হারিয়ে গেছে।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দল করবেন, আর শৃঙ্খলা মানবেন না। এটা হবে না। দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেও ব্যানার নামাতে পারেন না। এটা ঠিক নয়। এখন থেকে এলাকাভিত্তিক কর্মসূচি দিতে হবে। এসময় দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আবারো মহানগর কমিটি দিতে তাগিদ দেন ওবায়দুল কাদের।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, দলের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য এডভোকেট কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি প্রমুখ।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, অন্য, বস্ত্র, বাসস্থান শিক্ষা ও চিকিৎসা মৌলিক চাহিদা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করেছেন। শেখ হাসিনা যেভাবে মাথা গোঁজার ঠাঁই দিয়েছেন অন্য কেউ দেননি। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন, কিন্তু খুনিরা সেটি দেয়নি। এখন মারাও যদি যাই দুঃখ নেই। কারণ মানুষের মুখে ভাত তুলে দিয়েছি। এখন আর ফকিররাও বাশি ভাত খায় না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মৌলিক চাহিদার প্রতিশ্রুতি শুধু বাস্তবায়ন করছেন, তাই নয়, তিনি ভাবেন আগামীকাল কি করবো। আল্লাহ যদি শেখ হাসিনার পক্ষে না থাকতো তাহলে তিনি এতো কিছু করতে পারতেন না। আসুন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কোনো বাঁকা পথে না গিয়ে শেখ হাসিনার অর্জনে ভাগিদার হই।

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, বিএনপি সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়। তারা বলে আওয়ামী লীগ নেতারা পালাবার পথ পাবে না। আমি বলি আপনারা মানুষ হত্যা করেছেন, তার বিচার মানুষ করবে। আপনাদের পালাতে দেবো না। সন্ত্রাসের পথ পরিহার করে নির্বাচনে আসুন। নেত্রী বলেছেন, আমরা যেন তাদের কোনো কর্মসূচিতে উস্কানি না দেই। আমরা তাই উস্কানি দিতে চাই না। নির্বাচন পর্যন্ত আমরা এইভাবে কর্মসূচি পালন করে যাবো।

কামরুল ইসলাম বলেন, ২০১৩ সালের অবরোধ কর্মসূচি এখনো চলমান রয়েছে। কিন্তু কিছু করতে পারেনি। আগুন সন্ত্রাসী চালিয়ে দেশকে থামাতে পারেনি। তারেক রহমান বলেছেন, টেইক ব্যাক বাংলাদেশ। তারা এখন সন্ত্রাসের জন্য মহড়া দিচ্ছে। কর্মসূচি নামে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য করার চেষ্টা করছে। পরিস্কার করে বলতে চাই, বাংলাদেশে আর কোনো দিন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরে আসবে না।

ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, আজকে যখন আমাদের সামনে জাতীয় নির্বাচন আসছে, তখনই বিএনপি দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে। আবার তাদের আগুন সন্ত্রাসের পরিকল্পনা করছে। আর কোনো দিন বাঙলার মাটিতে আগুন সন্ত্রাস করতে দেওয়া হবে না। নির্বাচনে জয় লাভ করতে পারবে না, তাই বিএনপি নেতারা আবোলতাবোল বকছেন। জনগনের জন্য কাজ করেন। জনগণ ভোট দিলে ক্ষমতায় আসবেন।

মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে বিশ্বাসী নয়। তারা জানে বৈধ ভোটে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসতে পারবে না। নির্বাচনে জয় লাভ করার কোনো সম্ভাবনা নেই। যে দলের শীর্ষ নেতা দুর্নীতি দায়ে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। তাদের পক্ষে মানুষ নেই। বিএনপি এখন ভাঙনের মুখে পড়েছে। আগামীতে ক্ষমতায় যেতে হলে বিএনপির দুই শীর্ষ নেতাকে বাদ দেয়ার পক্ষে তাদের অনেকেই অবস্থান নিয়েছেন। তাদের জোট আওয়ামী লীগের ভাঙতে হবে না। এমনিতেই ভেঙে যাবে। তাই বলবো, আন্দোলন আন্দোলন খেলা না খেলে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিন।

এস/এ