বন্ধুকের নলের ভয়ে অনেকে বঙ্গবন্ধুর নাম পত্রিকায় লিখতে পারেনি
নিজস্ব প্রতিবেদক: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেছেন, দেশ স্বাধীনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে এগিয়ে নেয়ার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ যখন ঘুরে দাঁড়িয়েছিল ঠিক সেই সময় বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর পত্রিকায় ‘বঙ্গবন্ধু’র নাম অনেকে লিখতে পারেনি। অনেকে লিখতে চাইলেও পরদিন চাকুরি চলে যাওয়ার ভয়ে সেটি করেনি। দু’একটি পত্রিকা সাহসিকতার সাথে বঙ্গবন্ধুর নাম লিখতে পেরেছে। বন্ধুকের নলের ভয়ে অনেকে বঙ্গবন্ধুর নাম পত্রিকায় লিখতে পারেনি।
প্রতিমন্ত্রী আজ রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের (ডিএসইসি) বার্ষিক সাধারণ সভায় এসব কথা বলেন।
সংগঠনের সভাপতি মামুন ফরাজীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপিত ওমর ফারুক, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব দীপ আজাদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম প্রমুখ। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান হ্রদয় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকরা মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনীর নির্যাতন ও পৈশাচিকতা, মুক্তিকামী মানুষের লড়াই, পাকিস্তানি বন্দীশিবিরে বঙ্গবন্ধুকে নিপীড়ন ও নির্যাতনের কথা দেশের জনগণ এবং বিশ^বাসীর কাছে তুলে ধরছেন। মুক্তিযুদ্ধকে তরান্বিত করতে সাংবাদিকদের ভূমিকা রয়েছে। গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গত ৫০ বছরেও আমরা সংবাদকর্মীদের যথাযথ স্থান ও মর্যাদা দিতে পারিনি।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হারানো বাংলাদেশকে সত্য ও সুন্দরের পথে এগিয়ে নিয়ে এসেছেন। গত ১৩ বছর ধরে তিনি সাংবাদিকদের অভিভাবকের ভূমিকায় আছেন; যা অতীতের কোন সরকার প্রধানকে হতে দেখিনি। তিনি নিজেই সাংবাদিকদের অধিকারের কথা বলেন। অস্টম ওয়েজ বোর্ড এখনও পুরোপরি বাস্তবায়িত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে নবম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের কথা বলা হয়, আরও নানান সমালোচনা করা হয়। কিন্তু অষ্টম ও নবম ওয়েজবোর্ড ঘোষণা করা হয়েছে। সেগুলো বাস্তবায়নের কথা বলা হয় না। একটা রাষ্ট্র সুশৃঙ্খলভাবে চলতে হলে আইনের ভিত্তিতেই চলতে হবে। দেশে কোনো অপরাধী আইনের বাইরে থাকবে না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাব-এডিটরসরা সাহসিকতার সাথে রসবোধ ও সাহিত্যবোধ দিয়ে একটি সংবাদকে পাঠক ও শ্রোতাদের কাছে তুলে ধরতে বিরাট ভূমিকা পালন করেন। তিনি বলেন, সাব-এডিটরসরা সারা দিন-সারা রাত কাজ করেন, পরিবারেও অনেকে সময় দিতে পারেন না। বাইরে সংগঠন গোছানোর সুযোগ তাদের কম। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছেন। ডিজিটাল প্লাটফর্মে সংগঠিত হয়ে দেশের গণমাধ্যম গঠনে আপনারা কাজ করবেন। তিনি আশা করেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যাক। অনেকেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গেছেন। এ ক্যানভাস আরো বড় হোক এবং সমৃদ্ধ হোক।
এস/এ