প্রকল্প তদারকিতে কমিটি চান ডিসিরা, কমিটি ছাড়াই তদারকির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে:পরিকল্পনা মন্ত্রী

প্রকল্প তদারকিতে কমিটি চান ডিসিরা, কমিটি ছাড়াই তদারকির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে:পরিকল্পনা মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: জেলা পর্যায়ে উন্নয়ন প্রকল্প তদারকিতে কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেছেন জেলা প্রশাসকরা, তবে সরকারের পক্ষ থেকে এধরনের কমিটি ছাড়াই আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তদারকি চালিয়ে নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম.এ মান্নান।

মঙ্গলবার দুপুরে ওসামানী স্মৃতি মিলনায়তনে দুইদিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন

দিনের প্রথম অধিবেশনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, অর্থবিভাগ, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক বিভাগের ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
কোভিড পরিস্থিতির কারণে সামাজিক ও শারিরীক দূরত্ব বজায় রেখে বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন তারা।

পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ‘বৈঠকে জেলা প্রশাসকগণ চেয়েছিলে প্রকল্প বাস্তবায়নে যেন জেলা পর্যায়ে কমিটি করা হয়। আমরা বলেছি কমিটি করার প্রয়োজন নেই। ডিসিরা এলাকার ভেতরে কাজ দেখার অধিকার আছে। আমরা আপনাদের সঙ্গে ঘন ঘন যোগাযোগ করি, চিঠি দেই। সেগুলো অনুযায়ী আপানারা কাজ করবেন। আর কিছু প্রয়োজন হলে আমরা তো আছি। আমিও ডিসি ছিলাম। আমি মনে করি এটা প্রয়োজন নেই। যথেষ্ট দায়িত্ব ক্ষমতা তাদের হাতে আছে। এটাকে প্রয়োগ করা প্রয়োজন। সেজন্য ব্রিটিশ ধারণার যে ইনস্পেকশন, সেটার প্রয়োজন নেই। তারা দেখতে যাবে, ওভার সি করবে, সেটা আরও বেশি করে করার জন্য ডিসি সাহেবদের অনুরোধ করেছি।’

বিদ্যমান আইনেই জেলা প্রশাসকদেরকে উন্নয়ন প্রকল্প দেখভালের দায়িত্ব আছে বলেও জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বলে দিয়েছি, এটা তো অলরেডি বিধান আছে। জেলা প্রশাসকগণ তাদের এলাকায় যেসব প্রকল্প আছে সেগুলো দেখতে পারেন। দেখা মানে কিন্তু ইনস্পেকশন নয়, ইনস্পেকশন শব্দটা ভয়ংকর। পরিদর্শন অর্থে বলেছি। যাওয়া আসা খোজ খবর নেওয়া। সেটাকে আমরা আন্ডারলাইন করেছি। সরকারি প্রকল্পে বিদেশি ঋণ বোঝাতে সহায়তা শব্দটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকদের বৈঠকে সচেতন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘সহায়তা শব্দটা যেন সাবধানে ব্যবহার করা হয় সেদিকে আমি আজকে জোর দিয়েছি। এটা শুনলে মনে হয় খয়রাতি। আসলে সহায়তা সেই অর্থে আর নেই। উন্নয়ন বাজেট সম্পর্কে বলতে পারি- আমরা ঋণ হিসাবে বড় একটা অংশ নিই। সহায়তা মাঝে মাঝে আসে সেটা ১/২ শতাংশও হবেনা। বড় বড় সংস্থা নিজেদের প্রয়োজনেই এগিয়ে আসেন।
বৈঠকে সরকারি প্রকল্পগুলোর জন্য ভূমি অধিগ্রহণে জেলা প্রশাসকদের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।’

পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ডিসিদের সহায়তা আইনগতভাবেই প্রয়োজন। সেটাকে আমরা হাইলাইট করেছি। প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক দেরি হয়, তার বড় একটা কারণ ভূমি অধিগ্রহণ। কিছু আইনগত ব্যাপারও আছে। এটাকে আরও দ্রুত করার জন্য তাদের সহায়তা চেয়েছি। তারা সহায়তা দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর আগের একটি আদেশ অনুযায়ী বিভাগীয় পর্যায়ে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ বা আইএমইডির কার্যালয় চালুর সরকারি উদ্যোগের বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের জানানো হয়েছে।

এম.এ. মান্নান বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে আইএমইডির কার্যালয় করার ব্যাপারে আমাদের সরকার প্রধানের একটা নির্বাহী আদেশ আছে। আইএমইডির স্থাপনা যেন মাঠ পর্যায়ে তৈরি করা হয়।বিভাগীয় পর্যায়ে আমরা অফিস করবো। সেটাকে বাস্তবায়নের জন্য আমরা বিভাগীয় প্রধানের সহায়তা চেয়েছি। আইএমইডিকে ছড়িয়ে দেওয়ার প্লেন আছে। এছাড়া গাছ লাগাও, পশুপাখি হত্যা করোনা, নদীর ওপর যে পুলগুলো হয় সেগুলার উচ্চতা যেন যথাযথ থাকে, সোজাভাবে রাস্তা করো- প্রধানমন্ত্রীর এসব নির্দেশনা যেন মেনে চলা হয় সেই পরামর্শ আমরা দিয়েছি। বিভাগীয় পর্যায়ে আইএমইডির কার্যালয় স্থাপনের ফাইলটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থমন্ত্রণালয়ের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে, সেটা এখনও এগিয়ে চলছে। সময় মতো নিশ্চয় এটা হবে।

এস/এ