আরও ৭ জেলায় লকডাউনের সুপারিশ

আরও ৭ জেলায় লকডাউনের সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক:  করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে ভারতের সীমান্তবর্তী আরও সাত জেলায় লকডাউনের সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিশেষজ্ঞ কমিটি।

 

রোববার দুপুরে কমিটির সদস্য ও জনস্বাস্থ্যবিদ ড. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, শনিবার এক বৈঠকে চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ নওগাঁ, নাটোর, সাতক্ষীরা, যশোর, রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও খুলনা জেলায় লকডাউনের সুপারিশ করেছে। রোববার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।

 

ড. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, ইতিমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে লকডাউন চলছে। নতুন করে আরও সাতটি জেলাকে যুক্ত করা হয়েছে। তবে কক্সবাজার ফেনী ও নোয়াখালী, এই তিনটি সীমান্তবর্তী জেলার ব্যাপারে সুপারিশ করা হয়নি। এই জেলাগুলোতে সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে কমিটি। সংক্রমণ পর্যবেক্ষণ করে পর্যায়ক্রমে এগুলোতেও লকডাউনের চিন্তা করা যেতে পারে।

 

‘সারাদেশে লকডাউন’- এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, সারাদেশে লকডাউন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। যেহেতু এখন সীমান্তেই সংক্রমণ বাড়ছে, সেহেতু শুধু সীমান্তবর্তী এলাকায় অঞ্চলভিত্তিক কঠোর লকডাউনের মাধ্যমেই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

 

এর আগে গত ২৪ মে রাত থেকে করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় এক সপ্তাহের লকডাউন দেওয়া হয়েছে।

 

 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলার সংখ্যা ৩৫টি। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, যশোর, সাতক্ষীরা, পঞ্চগড়সহ বেশ কয়েকটি জেলা দিয়ে মানুষ ভারতে বেশি যাতায়াত করে। ফলে এসব জেলার মানুষের ভারতের ডাবল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। ভারতের ভ্যারিয়েন্টটি এক থেকে ২০ জন, ২০ থেকে ৪০০ জন পর্যন্ত মানুষকে আক্রান্ত করে।

 

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয়াবহতা রোধে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করতে হবে। যাতে সীমান্তবর্তী জেলার মানুষ অন্য শহরে না যেতে পারে। একইসঙ্গে অন্য জেলার মানুষও যেন সীমান্তবর্তী জেলায় প্রবেশ করতে না পারে। এছাড়া ভারত থেকে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে বৈধ বা অবৈধভাবে বাংলাদেশে যারাই আসুক না কেন, তাদের অবশ্যই কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হবে।

 

বিএসএমএমইউ উপাচার্য আরও বলেন, যেহেতু সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে, তাই চিকিৎসা ব্যবস্থা জোরদারের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করা এবং যারা ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছে তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। একইসঙ্গে আমাদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিস নিয়েও সচেতন ও সতর্ক হতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে দেখা যায়, ১০ থেকে ১৬ মে’র তুলনায় ১৭ থেকে ২৩ মে এই এক সপ্তাহে ২২ জেলায় নতুন করোনা রোগী বৃদ্ধির হার শতভাগ বা তার বেশি ছিল। এগুলোর মধ্যে ১৫টি জেলাই সীমান্তবর্তী। এ জেলাগুলোর মধ্যে নয়টির প্রতিটিতে এক সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা পঞ্চাশের নিচে। এ জেলাগুলোর মধ্যে আছে ভারতের সীমান্তবর্তী চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, জয়পুরহাট, রাজশাহী, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, সাতক্ষীরা, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, জামালপুর, রাঙামাটি ও বান্দরবান। এছাড়া এই তালিকায় আছে নাটোর, গাইবান্ধা, খুলনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, কক্সবাজার ও নরসিংদী।