চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করেই এগিয়ে যাচ্ছে দেশ: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক : সকল চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে একটি সমন্বিত পরিকল্পনা তৈরির মাধ্যমে উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় দেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম।
পাকিস্তান আমলের ১২৫ ডলারের মাথাপিছু আয়ের দেশ এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বের কারণে দুই হাজার পাঁচ শো ৫৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
আজ বিকেলে রাজধানীতে বনানীর বিটিসিএল (টিএন্ডটি) খেলার মাঠে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় বিডি ক্লিন আয়োজিত ‘সেভ আর্থ, সেভ বাংলাদেশ’ শীর্ষক জনসচেতনতামূলক প্রদর্শনীর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ভালো কাজ করতে গেলে চ্যালেঞ্জ আসবে। নতুন বছরে আমাদের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সমূহের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা মানুষের নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। আর তা বাস্তবায়নে ভূমিকা পালন করে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে সকল কিছুতে মানুষের অংশগ্রহণ অপরিহার্য।
মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন ক্যারিশম্যাটিক লিডার। তিনি জানতে এবং বুঝতেন বাংলাদেশকে দমায়ে রাখা যাবে না। এদেশ একদিন উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত হবে। আজ সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ভবিষ্যত বাণী সত্য প্রমাণিত হয়েছে।
পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকার খালগুলো দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা, চারপাশে নদীগুলোর খনন ও সংস্কার করে নৌ চলাচল উপযোগী এবং পরিবেশ সংরক্ষণের পাশাপাশি বাসযোগ্য শহর গড়তে ঢাকার দুই মেয়রসহ সবাই নিরলসভাবে কাজ করছেন।
এপ্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য সিটি করপোরেশন দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা। আর এই সংস্থাকে সহযোগিতা করা নাগরিকদের দায়িত্ব। যত্রতত্র বিড়ি-সিগারেটের খোসা ফেললে মাটির গুনাগুন নষ্ট হয়ে যায়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার পাশাপাশি নিজের বাসাবাড়িসহ আশপাশ পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলে পরিবেশন দূষণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। খাল বিল, নদী-নালা রক্ষা করতে হবে।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, সরকার সারাদেশে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়িত হলে দেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নতুন দিগন্তের উন্মোচন হবে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের শীঘ্রই শুরু করতে যাচ্ছে। এছাড়া গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও খুলনাসহ সকল সিটি কর্পোরেশন, বিভাগীয় শহর, জেলা, পৌরসভা এমনকি উপজেলা পরযায়ে বর্জ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, তামাক পণ্য গ্রহণে কোন উপকার আছে তা কেউ প্রমাণ করতে পারেনি। বিশ্বের কোনো গবেষণায় উঠে আসেনি। এটা মানুষ এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। সিগারেটের ফিল্টারের কাগজ তৈরিতে মিলিয়ন মিলিয়ন গাছ কেটে ফেলা হয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন এতে করে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে প্রাকৃতিক বিপররয় সৃষ্টি হচ্ছে। এসময়, তামাক জাতীয় পণ্য সেবন থেকে বিরত থাকার জন্য তিনি সকলকে আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বিজয়ের ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষ্যে মনুষ্য সৃষ্ট সমগ্র পৃথিবীর সর্বাধিক দূষণকারী পদার্থ পরিত্যক্ত সিগারেট ফিল্টারের কুফল সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরী করতে সারা বাংলাদেশের রাস্তা-ঘাট ও জলাশয় থেকে কুড়িয়ে আনা পাঁচ কোটির অধিক বিষাক্ত সিগারেট ফিল্টার দিয়ে বিডি ক্লিন একটি ব্যাতিক্রমী প্রদর্শনীর আয়োজন করে। যা সত্যি প্রশংসনীয়। আমি এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এসএম শরিফ উল ইসলাম এবং ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ নাসির। বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. রফিকুল মতিনও এসময় বক্তব্য দেন।
পরে, মন্ত্রী পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও উন্নত-সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান।
এস/এ