কাকরাইলের গ্যারেজপট্টিকে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান

কাকরাইলের গ্যারেজপট্টিকে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমান সরকার সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদক নির্মুলে জিরো ট্রলারেন্স ঘোষণা করেছে এবং সন্ত্রাস চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ী যে দলেরই হোকনা কেন তাদেরকে গ্রেফতার ও শাস্তি দিতে সরকার বদ্ধ পরিকর। ইতোমধ্যে সারাদেশে এ বিষয়ে স্পষ্ট দৃশ্যমান। তাই কাকরাইলের গ্যারেজ পট্টির বাসিন্দারাও প্রত্যাশা করেন তারাও সন্ত্রাসী ও মাদক ব্য্সায়ীদেও কালো থাবা থেকে মুক্ত হবেন। আর সরকারের আইনশৃংখলা রক্ষকারী বাহিনী দ্রত তাদেও রক্ষায় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যাবসায়ীদেও হাত থেকে রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করবেন।

মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানী কাকরাইলস্থ গ্যারেজ পট্টিতে আয়োজিত সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ-মাদক নির্মূল নাগরিক কমিটির সংবাদ সম্মেলনে তারা সরকারের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ-মাদক নির্মূল নাগিরিক কমিটির আহ্বায়ক মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা, যুগ্ম আহ্বায়ক সালাউদ্দিন, সদস্য সচিব মতিউর রহমান নিরব, নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী রফিক, সঞ্চিব, দুলাল, লিটন, রাজ্জাক, পলাশ, কাঞ্চন, জাহাঙ্গীর খোকন, সুমন, বেল্লাল, শাজাহান, খালেক, বিপুর, নুরু, ফখরুল, দিলিপ, লোকমান, শামীম, আনোয়ার, মনিরসহ প্রমুখ।

তারা বলেন, কাকরাইলের গ্যারেজপট্টিতে তথাকথিত যুবলীগের পরিচয় দিয়ে সন্ত্রাসী মেহেদী আলম ও তার দোসররা একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলো। তারা পল্টন, মতিঝিল ও শাজানপুর এলাকায় তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে অবৈধ চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, ছিনতাইসহ নানারকম অপকর্মে লিপ্ত ছিল। গত ২ ডিসেম্বর ২০২১ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কাকরাইলস্থ ডায়মন্ড রেস্তোরায় চাঁদাবাজি করে হোটেলের কর্মচারীদেরকে ব্যাপকভাবে মারধর করে। সেই রাতেই র‌্যাব-৩ তাদেরকে গ্রেফতার করে। তারা গ্রেফতার হলেও তাদের অন্যান্য দোসররা এখন আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে নানাভাবে হুমকি-ধামকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছে। এ বিষয়ে ৪ ডিসেম্বর ২০২১ইং তারিখে পল্টন মডেল থানায় মতিউর রহমান নিরব একটি সাধারণ ডায়েরি করে। যার জিডি নং- ২০০।

সেখানে মতিউর রহমান নিরব উল্লেখ করেন র‌্যাব কর্তৃক ভিত সন্ত্রাসী মেহেদী আলমের বোন তাকে ডাকাতি ও নারী নির্যাতন মামলা দিয়ে জেলে প্রেরণ করবে। এছাড়াও আরো ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে তাদের অন্যান্য সহযোগীরা। সন্ত্রাসী মেহেদী আলমের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে মতিউর রহমান নিরব প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, র‌্যাব মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তার অবৈধ কার্যকলাপের বিষয়ে অবগতি করে আবেদন করে। কাকরাইলস্থ গ্যারেজ পট্টিতে ডয়মন্ড বিল্ডাস লিঃ এর একজন সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে মেহেদী আলম তার কর্মজীবন শুরু করলেও পরবর্তীতে ডায়মন্ড বিল্ডাসের অন্যতম পার্টনার ডেসটিনি লিঃ এর এমডি রফিকুল আমিন ও তার সহযোগীরা গ্রেফতার হলে ডায়মন্ড বিল্ডাস এর চলমান কার্যক্রম তখন বন্ধ হয়ে গেলে তখন মেহেদী আলম নতুন রূপে আবিরভূত হয়। সে ডায়মন্ড বিল্ডাসে বিভিন্ন অফিসের গুরুত্বপূর্ণ আসবাপত্র এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট মূল ফটকসহ সবকিছু রাতের অন্ধকারে লুটপাট করে নিয়ে যায় এবং ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে। এ বিষয়ে পল্টন থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক জিডি হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয় যে, পরবর্তীতে ডায়মন্ড বিল্ডাসের সাইড অফিসের একটি ফ্ল্যাট অবৈধভাবে দখল করে সেখানে তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে বসবাস করতে শুরু করে এবং এলাকায় মাদক বিক্রিসহ ব্যাপক চাঁদাবাজি করে। তার সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজিতে এলাকার হকার থেকে শুরু করে গ্যারেজ পট্টির কেউ রেহাই পায়নি। তার বেপরোয়া চাঁদাবাজির কারণে সকলে ভয়ে ভীতি ছিল।

সংবাদ সম্মেলন থেকে আরো অভিযোগ করা হয় যে, সন্ত্রাসী মেহেদী আলম গং গ্রেফতার হওয়ার পর তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা কাকরাইলের গ্যারেজ পট্টিতে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তার দখলকৃত অবৈধ বাড়ী নতুন করে দখল নিতে তার সহযোগীরা গ্যারেজ পট্টিতে একাধিকবার এসেছে। কিন্তু দখলকৃত অবৈধ বাড়িটি র‌্যাব কর্তৃক তালা বন্ধ করে রাখায় তারা বাড়িতে উঠতে পারেনি। কিন্তু অবৈধ দখলকৃত ফ্ল্যাটের কোম্পানীর মালিকদের ও তাদের সদস্যদেরকে নানাভাবে ভয়-ভীতি ও মামলা-হামলা করবে বলে হুশিয়ারি দিচ্ছে। এ বিষয়ে মতিউর রহমান নিরব পল্টন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছে। যার ডায়েরী নং ২০০, তাং ০৪/১২/২০২১।

সংবাদ সম্মেলনে ৯ ও ১০ ডিসেম্বর ২০২১ দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ৯ ডিসেম্বরবৃহস্পতিবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, র‌্যাব মহাপরিচালক ও পুলিশ কমিশনার ঢাকা বরারব স্মারক লিপি প্রদান করা হবে। ১০ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নাগরিক মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হবে।

এস/এ