ওমিক্রন মোকাবিলায় স্বাস্থ্যখাতের প্রস্তুতি পর্যাপ্ত রয়েছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, “ওমিক্রন মোকাবিলায় আমাদের যা যা প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব ইতোমধ্যেই সব নিয়েছি।আমরা এর মধ্যেই ওমিক্রন মোকাবিলায় একটি আন্ত:মন্ত্রনালয় সভা করেছি। সেই সভা থেকে অনেকগুলো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সাউথ আফ্রিকা ও ওমিক্রন আক্রান্ত অন্যান্য দেশ থেকে যে’ই আসবে তাকে ৪৮ ঘন্টা আগে টেস্ট করে আসতে হবে এবং দেশে তাদেরকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। ইতোমধ্যেই বর্ডারে পরীক্ষা জোরদার করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিনও জোরদার করেছি আমরা। ঢাকায় যেসব হাসপাতালে আগেও কোভিড চিকিৎসা হয়েছে সেগুলিকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তার বাইরেও আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। এয়ারপোর্টে স্ক্রিনিং ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ল্যাবের পরিধি বাড়ানো হয়েছে। আগে দুই হাজার স্কয়ার ফিটের ল্যাব ছিলো সেটি এখন ৩০ হাজার স্কয়ার ফিটের বেশি সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, নতুন করে অতি সম্প্রতি ৮ হাজারেরও বেশি নার্স এবং ৪ হাজারেরও বেশি চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। দেশে চিকিৎসা ব্যাবস্থাপনা আরো জোরদার করা হয়েছে। ওমিক্রন নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সিদ্ধান্তগুলির দিকেও আমাদের দৃষ্টিপাত রয়েছে। তবে, সব প্রস্তুতির পরও দেশের মানুষকে আরো বেশি স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে।”
আজ দুপুরে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব হেলথ ম্যানেজমেন্টে (বিআইএইচএম) নবনির্মিত ভবন পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ব্রিফিংকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী করোনা ভাইরাসের নতুন ধরণ ওমিক্রন আক্রান্ত ব্যক্তিদের এই মুহুর্তে দেশে না আসলেই ভালো হবে বলে জানান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “বিদেশ থেকে যারা দেশে আসবেন তাদেরও দায়িত্ব আছে। তারা যেন সংক্রমিত হয়ে দেশে না আসেন। যারা বিদেশে আছেন, বিশেষ করে যারা আফ্রিকার দেশে আছেন এই মুহুর্তে দেশে না আসলেই ভালো হয়। কারণ আপনারা আপনাদের পরিবার ও দেশকে নিরাপদে রাখতে চাইবেন। তাই যে যেখানে আছেন সেখানেই নিরাপদে থাকুন।”
সীমান্ত বন্ধ করা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এই মুহুর্তে বর্ডার বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই। দেশ ভালো আছে নিরাপদে আছে। এখনও এমন পরিস্থিতি হয়নি বর্ডার বন্ধ করতে হবে বা লকডাউন দিতে হবে। সীমান্ত এলাকার প্রতিটি বর্ডারে স্ক্রিনিং ও পরীক্ষা ব্যাবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
ওমিক্রন মোকাবিলা করা নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা আমাদের হাসপাতালগুলোকে প্রস্তত রেখেছি। ইতোমধ্যে জেলায় জেলায় চিঠি দিয়েছি তারা যেন ওমিক্রন মোকাবেলায় প্রস্তুতি গ্রহন করেন।
ভ্যাকসিন কার্যক্রম নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, আমাদের টিকা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে সাত কোটির বেশি প্রথম ডোজ ও চার কোটির কাছাকাছি দ্বিতীয় ডোজ টিকা দিয়েছি। এটাও একটা বড় প্রস্তুতি। কারণ ওমিক্রনকে যদি মোকাবেলা করতে হয় তাহলে টিকা নিতে হবে। স্বাস্থ্য বিধি মানতে হবে। মাস্ক পড়তে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সামাজিকভাবে সচেতন হতে হব। আমাদের টিকার কোনো ঘাটতি হবে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রীও আমাদের অনুমতি দিয়েছেন। দ্রুতই আমরা ষাটোর্ধ নাগরিকদের বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু করবো।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে পরিদর্শনকালে আরও উপস্থিত ছিলেন, ত্রাণ দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া,স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা সহ অন্যান্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
এস/এ