বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইঃ রিপোর্ট

বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইঃ রিপোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকায় ইসলামি জঙ্গীবাদের মূল বা গোড়াকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। ১৯৭১ সালে একটা ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।

বাংলাদেশ লাইভ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এলইটি ছাড়াও আইএসআই-এর ভূমিকার উপর জোর দিয়ে বাংলাদেশের সাবেক মন্ত্রী হাসান উল-ইনু বলেছিলেন, “বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার সময় থেকে পাকিস্তানের আইএসআই বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে এবং এই দিকগুলিকে উপেক্ষা করা যায় না।”

বাংলাদেশের সন্ত্রাস এবং এর পেছনে পাকিস্তানের সমর্থনের মধ্যে যে সম্পর্ক রয়েছে তা ২০১৬ সালে ঢাকার অভিজাত এলাকা হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই হামলায় পাঁচটি ভিন্ন দেশের ২০ জন লোককে হত্যা করা হয়েছিল।

জামাত-উল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) নামে একটি দেশীয় গোষ্ঠী এই হামলা চালিয়েছিল। বাংলাদেশ লাইভ নিউজ জানিয়েছে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর উপর হামলা-পরবর্তী অভিযান থেকে জানা গেছে যে এই গোষ্ঠীটি পাকিস্তান-ভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি) দ্বারা সমর্থিত ছিল।

প্রায়শই এলইটি সহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণ, তহবিল যোগান এবং সুরক্ষা দেয়ার জন্য পাকিস্তানের আইএসআইকে অভিযুক্ত করা হয়।

বাংলাদেশ লাইভ নিউজ রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৬ সালে ঢাকা হামলার পরপরই বাংলাদেশ সরকার তদন্তে দেখতে পায় যে জেএমবি সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানে এবং তারপরে আফগানিস্তানে সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিল। বাংলাদেশ লাইভ নিউজ রিপোর্ট অনুযায়ী, এলইটি জেএমবিকে প্রশিক্ষণ এবং বাংলাদেশে মৌলবাদের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।

জেএমবি এবং এলইটি কক্সবাজারের টেকনাফ এবং বাংলাদেশের বান্দরবানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী রোহিঙ্গা মুসলমানদের সহায়তা করতে শুরু করেছে বলেও তথ্য পাওয়া গেছে।

মিয়ানমারের সাবেক প্রেসিডেন্ট টিন কিয়াও দেশটির সীমান্ত চৌকিতে হামলার জন্য রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আকা মুল মুজাহিদিন (এএমএম) কে দায়ী করেছেন।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ভিত্তিক এএমএম হরকাত-উল-জিহাদ ইসলামী-আরাকান (হুজি-এ) থেকে উদ্ভূত হয়েছে, যা এলইটি এবং পাকিস্তান তালেবানের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখে।

এএমএম রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির থেকে যুবকদের নিয়োগ করছে এবং তাদের বাংলাদেশ ও ভারতে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। বাংলাদেশ লাইভ নিউজ জানিয়েছে, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে, এলইটি, জেএমবি, এএমএমের মধ্যে শক্তিশালী সহযোগিতা বিদ্যমান রয়েছে কারণ বাংলাদেশ থেকে অনেক যুবককে অস্ত্র ও অস্ত্রের প্রশিক্ষণের জন্য পাকিস্তানে পাঠানো হয়।

২০১২ সালে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ পাকিস্তান-ভিত্তিক রোহিঙ্গা অপারেটিভ মাওলানা শাবির আহমেদকে গ্রেপ্তার করেছিল। তাকে পাকিস্তান ভিত্তিক আরেকটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদ (জেএম) এর হয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের সাথে কাজ করতে দেখা গেছে।

কয়েক বছর আগে জেএমবি ‘বাংলাদেশকে তালেবানী আফগানিস্তানে পরিণত করার’ স্লোগান দিয়েছিল। এখন জেএমবি ইসলামিক স্টেটের প্রতি আনুগত্যের অঙ্গীকার করেছে।

পাকিস্তান-ভিত্তিক এলইটি-র সাহায্য ছাড়া এটি সম্ভব হতো না, এই সংগঠনের সন্ত্রাসীরা ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরেও সক্রিয় রয়েছে। তাই আফগানিস্তানে তালেবানের প্রত্যাবর্তন এখন বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে কারণ চরমপন্থা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ লাইভ নিউজ।

বাংলাদেশের দুটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জামায়াত এবং হেফাজতও ঘোষণা করেছে যে তারা দেশে একটি তালেবান রাষ্ট্র তৈরি করতে চায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে নিষ্ক্রিয়তা এলইটি নেতাদের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা এখন ভারত ছাড়াও বাংলাদেশকে তাদের লক্ষ্যবস্তু বানাতে চায়।

এস/এ