মওলানা ভাসানীই স্বাধীনতার বীজ বপন করেছিলেন : মোস্তফা ভুইয়া
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী’র সততা, দেশপ্রেম ও দূরদর্শিতাসম্পন্ন ক্ষমতা কার না জানা। দূরদর্শিতাসম্পন্ন ক্ষমতার বলেই হয়তো তিনি পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার এক দশক পর এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের ১৩ বছর পূর্বেই ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলনে ১৯৫৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী সর্বপ্রথম পাকিস্তানকে “আসসালামু আলাইকুম” জানিয়ে দিয়েছিলেন যার অর্থই ছিলো, পূর্ব বাংলা থেকে বিদায় হও । এ বাক্যের মাধ্যমেই সেদিন তিনি স্বাধীনতার বীজ বপন করে দিয়েছিলেন স্বাধীনতাকামী প্রতিটি বাঙালীর মনে । সময় গড়ানোর সাথে সাথে সেই বীজ বৃক্ষে পরিণত হলো, ডালপালা ছড়ালো, ফল দিতে শুরু করলো ’৭০-’৭১ এ ।
.
বুধবার (১৭ নভেম্বর) মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মরহুমের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতেহা পাঠ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইদানিং এক শ্রেণীর বিবেক বর্জিত বুদ্ধিজীবী ও লেখক ইতহাস বিকৃতির মাধ্যমে মওলানা ভাসানীর চরিত্র হননের চেষ্টা করছে। তাদেরই একজন হলেন ড. মোহাম্মদ হান্নান। তিনি তার রচিত ‘বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস’ বইয়ে মাওলানা ভাসানী সম্পর্কে বিকৃত ও মিথ্যা তথ্য উপস্থপনের মাধ্যমে মুলত মওলানা ভাসানীর চত্রি হননের চেষ্টা করেছেন। এ বিষয়ে প্রখ্যাত রাজনীতিক বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রেসিডিয়াম সদস্য হায়দার আকবর খান রনো বার বার তাকে অবহিত করলেও তিনি তা সংশোধন করেন নাঈ।
তিনি বলেন, লেখক মাওলানা ভাসানী সম্পর্কে লিখেছেন “বাষট্টির ছাত্র আন্দোলনের সময়ে যে ৯ নেতার বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছিল, তাতে মাওলানা ভাসানীর স্বাক্ষর ছিল না। এই ব্যাপারে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে সরকারের সঙ্গে ভাসানীর সখ্য ছিল বলেই তিনি এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর দিতে সম্মত হননি।” যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
তিনি বলেন, প্রকৃত সত্য হলো, ‘৯ নেতার বিবৃতিতে ভাসানীর স্বাক্ষর থাকার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। কারণ, তিনি বন্দী ছিলেন। ১৯৫৮ সালের ১২ অক্টোবর মাওলানা ভাসানীকে টাঙ্গাইল থেকে গ্রেপ্তার করে আইয়ুব সামরিক সরকার। তারপরে তিনি ঢাকায় একটানা বন্দী ছিলেন ১৯৬২ সালের ৩ নভেম্বর পর্যন্ত। পরবর্তীতে কৃষকদের কয়েকটি দাবি নিয়ে অনশন করলে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তিনতলায় ১০ নম্বর কেবিনে তিনি বন্দী ছিলেন। ৯ নেতার বিবৃতি স্বাক্ষরিত হয়েছে ১৯৬২ সালের ২৪ জুন। অতএব একজন বন্দী নেতাকে সরকারের সহযোগী হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করাটা যথার্থ কি না, তা পাঠকেরাই বিচার করবেন।’
তিনি বইয়ের লেখক মোহাম্মদ হাননানের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ইতিহাস লেখায় হাত দেওয়ার আগে কিছুটা গবেষণাও করা দরকার। কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা রাজনৈতিক নেতাকে কারও পছন্দ হতে পারে অথবা না হতে পারে। কিন্তু তথ্য সঠিক না হলে তাঁকে ইতিহাসবিদ বা গবেষক কোনোটাই বলা যায় না।’
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, বাংলাদেশ ন্যাপ সমাজকল্যাণ সম্পাদক মিতা রহমান, সাথি ইসলাম প্রমুখ।
এস/এ