দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে ইলিশের স্বাদ পৌঁছে দিতে চাই: মৎস্যমন্ত্রী

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে ইলিশের স্বাদ পৌঁছে দিতে চাই: মৎস্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে ইলিশের স্বাদ পৌঁছে দিতে চান বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

রবিবার রাজধানীর মৎস্য ভবনে মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২১ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত মূল্যায়ন এবং ভবিষ্যত করণীয় বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী কথা জানান।

এ সময় তিনি বলেন “আমাদের সবচেয়ে সুস্বাদু ও ভালো মাছ হচ্ছে ইলিশ। ইলিশ মাছ সংরক্ষণ, উৎপাদন বৃদ্ধি, এর নিরাপদ আশ্রয় ও নিরাপদ প্রজননের জন্য সরকার নানা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। মা ইলিশ রক্ষা, ইলিশের অভয়াশ্রম সৃষ্টি করা, ইলিশ গবেষণা, জাটকা সংরক্ষণসহ বিভিন্ন ভাবে আমরা কাজ করছি। ইলিশের পরিসর বৃদ্ধির জন্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সকল প্রকার আগ্রহ রয়েছে, পরিকল্পনা রয়েছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে স্থানীয় প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তরের কর্মকর্তারা সকলে মিলে ভূমিকা পালন করতে হবে”।

মন্ত্রী আরো যোগ করেন, “সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা চাইব আগামীতে ইলিশ উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে। ইলিশের উৎপাদন এমন একটা জায়গায় আসুক যাতে গ্রাম-গঞ্জে, প্রত্যন্ত অঞ্চলের সব মানুষ সুস্বাদু ইলিশের স্বাদ নিতে পারেন। পরিপূর্ণতার সাথে পরিবার-পরিজন নিয়ে ইলিশ খেতে পারেন”।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, “সারা বিশ্বে সবচেয়ে সুস্বাদু ও সর্বোচ্চ ইলিশ মাছ আহরণে আমাদের স্বত্বাধিকার রয়েছে। সে জন্য ইলিশ রক্ষার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে আমরা কর্মসূচি গ্রহণ করি। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ব্যাপকহারে যাতে ইলিশ রপ্তানি না হয় সে পদক্ষেপও আমরা নিয়েছি”।

“সাম্প্রতিক সময়ে কিছু প্রতিকূলতা লক্ষ্য করেছি। কিছু দুষ্ট লোক তাদের অসাধু পরিকল্পনা ও চিন্তা-চেতনা বাস্তবায়ন করার জন্য দরিদ্র-অসহায় জেলেদের নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে নামাচ্ছে। যারা নিষেধাজ্ঞার সময় মৎস্য আহরণে যায় তাদের বিশাল অংশ অন্যের দ্বারা ব্যবহৃত হয়”-যোগ করেন মন্ত্রী।

মন্ত্রী আরো যোগ করেন, “মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান শতভাগ সফল করতে নতুন নতুন সৃজনশীল কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে হবে। জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। মৎস্যজীবী বিভিন্ন সংগঠনের ভূমিকা আরো বেশি কিভাবে রাখা যায়, সেজন্য নীতি নির্ধারণ করতে হবে। মা ইলিশ সংরক্ষণে এবারের অভিযানের সাফল্যের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে আরো ভালোভাবে ভবিষ্যতে অভিযান পরিচালনা করতে হবে”।

মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে এবছর যারা ভূমিকা রেখেছেন তাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ সময় ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী।

মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস্ আফরোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, সুবোল বোস মনি, মোঃ তৌফিকুল আরিফ ও এস এম ফেরদৌস আলমসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং মৎস্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় দেশের ৮ বিভাগের বিভাগীয় মৎস্য দপ্তরের উপপরিচালকগণ সংশ্লিষ্ট বিভাগের মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের কার্যক্রম তুলে ধরেন। কর্মশালায় জানানো হয় এ বছর মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের অংশ হিসেবে ৪ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত ১ হাজার ৮৯২টি মোবাইল কোর্ট ও ১৫ হাজার ৩৮৮টি অভিযান পরিচালনা করা হয় এবং প্রায় ৮৮৪ লাখ মিটার অবৈধ জাল আটক করা হয়।

এস/এ