উজিরপুরের রঞ্জিত ফলিয়ার মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি ঘর পেতে আর কি যোগ্যতা প্রয়োজন!
সমীরণ রায়
উজিরপুরের হারতা ইউনিয়নের কালবিলা গ্রাম। কালবিলা গ্রামের বাসিন্দা রঞ্জিত ফলিয়া। তার দুই সন্তান। মেয়েকে কষ্ট করে কোনোভাবে বিয়ে দিয়েছেন। আর ছেলে লেখা পড়া করে। সঙ্গে ৮০ বছরের বেশি বয়স বৃদ্ধ মা। জায়গা জমি নেই। দিন আনেন, দিন খান। যদি কাজ থাকে, তাহলে দুবেলা ভাত জোটে। আর কাজ না থাকলে অনাহারে দিন কাটে। সঙ্গে রাতে ঘুমানোর জন্য নেই মাথার ওপর ছাঁদ। কিন্তু দেখার যেন কেউ নেই।
হারতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হরেন্দ্রনাথ রায়। তিনি অত্যন্ত সৌখিন মানুষ। হারতা বাজারে ব্যবসা করেন। তার ব্যবসা ও দলীয় পদপদবী টিকিয়ে রাখতে যা খুশি তাই করতে পারেন। জেলা- উপজেলার দলীয় নেতাদের ম্যানেজ করে পর পর দুই মেয়াদ চেয়ারম্যান হিসেবে পার করতে যাচ্ছেন। এতে করে এলাকার কে খেয়েছেন। আর কে না খেয়ে আছেন, তা দেখার সময় নেই। এ তো গেলো খাবার বিষয়। কিন্তু কারো থাকার ঘর আছে কি না, তাও দেখার সময় নেই। এমনকি রঞ্জিত ফলিয়ার ঘর নেই, একাধিকবার চেয়ারম্যানের কাছে লোক মারফত জানিয়েছেন। কিন্তু তাতে কোনো ফল হয়নি।
রঞ্জিত ফলিয়া বলেন, আমার বাড়ির পাশের স্বপন হারতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হরেন্দ্রনাথ রায়কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুজিববর্ষে দেওয়া উপহারের ঘরের জন্য একাধিকবার বলেছেন। কিন্তু তাতে চেয়ারম্যান কোনো সায় দেননি। এখন আমি কি করবো। কেউ কিছু না করলে এভাবেই দিনযাপন করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে গৃহহীনদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। আমার জানা মতে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা গৃহহীনদের তালিকা করছেন। কিন্তু আমার প্রশ্ন সেখানে রঞ্জিত ফলিয়ার নামটি নেই কেন? নাকি আত্মীয় স্বজনের তালিকা দিয়েছেন হারতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হরেন্দ্রনাথ রায়। অথবা যারা বেশি টাকা ঘুষ দিয়েছেন, তাদের নামের তালিকা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন? এটি শুধু উজিরপুর উপজেলার নয়, যেকোনো মানবিক মানুষ দেখলে চোখে জল আসবে। কিন্তু হারতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় কোনো নেতাকর্মীর চোখে জলতো দূরের কথা, মন খারাপও হয়নি। এটি আমাকে বিস্মিত করেছে। আর কতো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলে রঞ্জিত ফলিয়া মুজিব শতবর্ষের একটি ঘর পাবেন? আমি বরিশালের জেলা প্রশাসক, উজিরপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মর্তার কাছে আবেদন জানাবো, আপনারা বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবেন। প্রয়োজনে আপনারা সরেজমিনে দেখে যেতে পারেন।
সবশেষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনি দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আপনি যাদের জনগণের সেবা করার জন্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করছেন। তাদের অনেকেরই জনগণের সেবা করার মন নেই। তাদের কেউ কেউ নিজের আখের গোছানোতে মরিয়া। তাই আপনার কাছে আমার আবেদন থাকবে। যাতে রঞ্জিত ফলিয়া মুজিববর্ষে আপনার দেওয়া উপহারের একটি ঘর পান, সেই ব্যবস্থাটুকু করবেন।
লেখক : সাংবাদিক