বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন খাটি পরিবেশ ও প্রকৃতি প্রেমিক: পরিবেশমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন খাটি পরিবেশ ও প্রেমিক। বাল্যকাল হতেই প্রকৃতির প্রতি ছিলো তাঁর অগাধ ভালোবাসা। রাজনৈতিক কারণে বারবার কারাবরণ করতে গিয়ে তাঁর এই প্রকৃতিপ্রেম আরও গভীর রূপ নেয়। কারাজীবনে যেটুকু সময় ও সুযোগ পেয়েছেন, নিজের ওয়ার্ড বা সেলের সামনে ফুলের বাগান গড়েছেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর এই বৃক্ষপ্রেম দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আরও বৃহত্তর পরিসরে বিকশিত হতে থাকে।
বুধবার সন্ধ্যায় মেহেরপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘মুজিববর্ষে শতঘন্টা মুজিবচর্চা’ শিরোনামের ধারাবাহিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও প্রধান বক্তা হিসেবে “প্রকৃতি ও পরিবেশ প্রেমিক বঙ্গবন্ধু ” শীর্ষক আলোচনা সভায় ঢাকাস্থ সরকারি বাসভবন হতে অনলাইনে যুক্ত হয়ে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের পাশাপাশি একজন দূরদর্শী রাজনীতিবিদের মতো দেশের প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর রেসকোর্স ময়দানে গাছ লাগিয়ে ঘোড়দৌড়ের ময়দানকে ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যান’ এ পরিণত করেন। সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে দেশজুড়ে শুরু করেন বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। বঙ্গবন্ধুর হাতে সূচিত হওয়া উপকূলীয় বনায়ন এখন সারা বিশ্বেই মডেল হয়ে উঠেছে। দেশে প্রতিবছর যথানিয়মে পালিত হচ্ছে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। দেশজুড়ে বৃক্ষপ্রেমী মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। আজকের বাংলাদেশের রাস্তার দুপাশে যে সারি সারি বৃক্ষরাজি আমাদের প্রকৃতিকে অপরূপ করেছে, দৃষ্টিনন্দন করেছে, এটি সূচিত হয়েছিল জাতির পিতার হাত ধরেই।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, শুধু বৃক্ষরোপণই নয়, বঙ্গবন্ধু সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ১৯৭৩ সালে ‘বাংলাদেশ ওয়াইল্ডলাইফ (প্রিজারভেশন) অর্ডার-১৯৭৩’ অধ্যাদেশ জারি করেন। দূষণমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে ‘ওয়াটার পলিউশন কন্ট্রোল অর্ডিনেন্স ১৯৭৩’ জারি করেন। ১৯৭৩ সালেই পানি দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে পরিবেশ সংরক্ষণ কার্যক্রমের সূচনা করেন। জাতির পিতার বিভিন্ন কার্যকরী উদ্যোগ এবং উদাত্ত আহবানে বাংলাদেশে পরিবেশ রক্ষা ও বৃক্ষরোপণ একটি সামাজিক আন্দোলনে পরিণত হয়।
বনমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় জাতির পিতার প্রদর্শিত পথেই হাঁটছে তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে আমাদের নিজেদের প্রয়োজনেই পরিবেশ আরও সুন্দর এবং সজীব রাখার জন্য বেশি বেশি গাছ লাগিয়ে ভরিয়ে তুলতে হবে। এ মহতী উদ্যোগ সফল করার জন্য সরকারের পাশাপাশি সকল বেসরকারি সংস্থা, সকল শ্রেণিপেশার মানুষ সর্বোপরি দল মত, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সাধারণ জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রয়াসেই আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত স্বপ্নের সবুজ শ্যামল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সক্ষম হবো।
মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বছর ব্যাপী চলমান অনুষ্ঠানের আজকের পর্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ। আলোচনা সভার পর প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
এস/এ