রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে উদ্বেগ প্রধানমন্ত্রীর

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে উদ্বেগ প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক: মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের ফলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট অনিশ্চয়তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার গণভবনে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) প্রেসিডেন্ট ভলকান বজকিরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় রোহিঙ্গা সংকট ছাড়াও আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন, জলবায়ু পরিবর্তন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। সাক্ষাতে ইউএনজিএ প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের অর্জন নিয়ে প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ সারা বিশ্বের সামনে একটি দৃষ্টান্ত।

পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ নিয়ে ব্রিফ করেন।

 

মিয়ানমারে জাতিগত নিধনের শিকার ও জোরপূর্বক বিতাড়নের ফলে দশ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে আমরা আলোচনায় ছিলাম। যদিও সেখানে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ছিল না।’ মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। কিন্তু মিয়ানমারের এই পরিস্থিতির কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়ায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।’

 

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের অস্থায়ী আবাসনের জন্য ভাসানচরকে প্রস্তুত করার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভাসানচর দ্বীপে এক লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে নেওয়া যেতে পারে। এখনও পর্যন্ত সেখানে ১৮ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে নেওয়া হয়েছে।’

 

১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে মানবিক দিক বিবেচনায় আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) প্রেসিডেন্ট ভলকান বজকির।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের করোনা পরিস্থিতি জাতিসংঘের এই কর্মকর্তার সামনে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘মহামারির মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দেশের জনগণ এবং অর্থনীতিকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে।’ করোনা থেকে মানুষের প্রাণ বাঁচাতে এবং এর প্রভাব মোকাবিলা করে অর্থনীতিকে সচল রাখতে প্রণোদনা প্যাকেজ ও সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের জন্য অন্যান্য অর্থ সুবিধা দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়ানোর পাশাপাশি সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ সরকার প্রধান।

 

এ বছর সরকার প্রধানদের সশরীরে উপস্থিতির মাধ্যমে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন করার চিন্তা-ভাবনার কথা জানান ভলকান বজকির। তিনি বলেন, ‘এ বছর জাতিসংঘ অধিবেশনের সময় প্রতিটি দেশ দুই জনের একটি প্রতিনিধি দল উপস্থিত থাকার বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করছি।’

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে লিঙ্গ বৈষম্য এবং নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেন ভলকান বজকির। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একজন লেডি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অসাধারণ সফলতা অর্জন করেছে।’

 

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন— বাংলাদেশে অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন।