কারখানায় আগুনে পুড়ে শ্রমিক নিহত রাষ্ট্রীয় কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড

কারখানায় আগুনে পুড়ে শ্রমিক নিহত রাষ্ট্রীয় কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক: শনিবার জাতীয় প্রেসকাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা বলেন, এই ঘটনার জন্য দায়ি কারখানা মালিক ও কারখানা পদির্শককে বিচার করতে হবে। রানা প্লাজা, তাজরীন, টাম্পাকোর পর আবারও মালিকের অতি মুনাফার লোভ ও রাষ্ট্রীয় অবহেলার নির্মম শিকার হয়ে সেজান জুস কারখানায় সরকারিভাবে ঘোষিত ৫২ জন শ্রমিক আগুনে পুড়ে নিহত হয়েছেন।

তারা বলেন, সরকারি ২৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে অনুমোদন সাপেক্ষে কারখানা করার আইন থাকলেও ৬ তলা কারখানা ভবন নির্মাণে কোন বিল্ডিং কোড মানা হয়নি। অগ্নি নির্বাপনের জন্য ফায়ার সেফটির ব্যবস্থা ছিল না। জরুরি বহিঃনির্গমণের জন্য ভবনে যেখানে ৪টি সিড়ি থাকার কথা সেখানে ছিল ২টি।

গেইট খোলা থাকার কথা থাকলেও তা তালা বন্ধ ছিল, নিয়ম ভেঙে কারখানা ভবনেই কেমিক্যালসহ দাহ্য পদার্থ গুদামজাত করা ছিল।

তারা আরও বলেন, ওই ভবনের ৪ তলার গেইট খোলা থাকলে হয়তো অধিকাংশ শ্রমিক বাঁচতে পারতো। শিশু শ্রম নিষিদ্ধ থাকার পরও আইনের লংঘন ঘটিয়ে ১২-১৭ বছর পর্যন্ত শিশু কিশোর শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এত সব অনিয়ম দেখার দায়িত্ব ছিল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান কল-কারখানা পরিদর্শন অফিসের। অথচ তারা কারখানা পরিদর্শন করেনি।

ফলে এটি একটি রাষ্ট্রীয় অবহেলা-গাফিলতিজনিত কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড। ওই ঘটনার জন্য দায়িদের বিচারের পাশাপাশি নিহত সকল শ্রমিককে আইএলও কনভেশন অনুয়ায়ী আজীবন আয়ের সমান তিপূরণ ও আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তারা।

বাম জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় নেতা মানস নন্দী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের সভাপতি হামিদুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভুইয়া প্রমুখ।