আশ্রয়ণ প্রকল্পের দুনীর্তির বিচার হোক

আশ্রয়ণ প্রকল্পের দুনীর্তির বিচার হোক

———–মিজানুর রহমান

অর্থনীতির বিবেচনায় আমাদের দেশে বিভিন্ন স্তরের মানুষের বসবাস। এর মধ্যে ভুমিহীন গৃহহীন মানুষের সংখ্যা একেবারে নেহাৎ কম নয়। প্রাত্যহিক জীবনে তাদের দুর্দশা যে কোন হ্যদয়বান মানুষের মনে দাগ কাঁটার মতো।

আমাদের সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সাধারণ মানুষের এই সব বিষয় নিজ অনুভূতিতে ধারণ করে তাদের কল্যাণে নানা পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে সামনে রেখে স্বাধীনতার স্বাদ সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে ভুমিহীন গৃহহীন মানুষের মাঝে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ঘর উপহার দিয়ে দুস্থ মানুষদের পুর্নবাসনের উদ্যোগ নেন।

প্রতিটি গৃহহীন পরিবারকে দুই শতাংশ জমিসহ আধুনিক সেমি পাকা বাড়ি তৈরী করে বিতরণের উদ্যোগ নিলে মানবিক একাজ সকলের প্রশংসা কুড়ায়। একাজ বাস্তবায়নের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধিনে আশ্রয়ণ প্রকল্প নামের বিশেষ উদ্যোগ গ্রহন করা হয়।

এটি বাস্তবায়নে প্রত্যোক উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা,উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি), উপজেলা স্হানীয় সরকার প্রকৌশলী,নির্বাচিত সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব হিসেবে নিয়ে পাঁচ সদস্যের তদারকি কমিটি করা হয়।

এই প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে প্রায় সোয়া লাখ ঘর সুবিধা ভোগীদের মাঝে বুঝিয়ে দেয়া হয়। এই মানবিক কর্মটিও আমাদের সমাজের অসুস্থতা ও অস্থিরতা থেকে রেহাই পায়নি।

গৃহহীন সাধারণ সহায়সম্বলহীন মানুষ তাদের প্রাপ্য বুঝে নিতে নানা ভাবে বাধা গ্রস্হ হয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়শই সংবাদ প্রকাশ পাচ্ছে।

নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে অন্যায় ভাবে কৌশলে তাদের কাছ থেকে জোর জবরদস্তির মাধ্যমে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ আসছে ভুরিভুরি। এই সহায়সম্বলহীন সাধারণ মানুষেরা সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় দুনীর্তিগ্রস্হদের চাপে পড়ে ঘুষ দিয়ে ঘর বুঝে নিয়ে নতুন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়।

সামান্য বৃষ্টিতে ঘরগুলো ভেঙে পড়ে, ফাটল ধরে আবার কোনো কোনোটি অস্বাভাবিক ভাবে দেবে যেয়ে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়লে তাদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।কাজের মানে ফাঁকি দিয়ে নিম্ন মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

২২ টি জেলার ৩৬ টি উপজেলার আশ্রয়ণ প্রকল্প নিয়ে সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুরুত্বসহ সচিত্র এই সকল অপকর্মের সংবাদ পরিবেশীত হয়।

যে কাজের সাথে জাতির পিতার জন্ম শতবর্ষের গৌরব, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীক্ষনের উচ্ছ্বাস আবেগ জড়িত আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভালোবাসার প্রকাশ যে প্রকল্প সেই কাজকে যারা এভাবে নিজের স্বার্থে নষ্ট করে দিতে পারে তাদের কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত।

উপজেলা পযার্য়ের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক স্তরের চাকুরী কাঠামোতে তরুন কর্মকর্তাগন এই কাজের দেখভাল করছেন। তাদের আগামী দিনের দক্ষ দায়িত্বশীল আমলা হয়ে উঠার লক্ষে অন্যায় অনিয়মকে পরিহার করে এই সুযোগকে কাজে লাগানো উচিত। সুতরাং এই ধরনের অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার হওয়া জরুরি।

তবে আশার বিষয় ইতোমধ্যেই অভিযোগের কারণে অনেকের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঘরগুলো বসবাসের উপযোগী করে দেয়ার কাজ চলছে। ভবিষ্যতে আর যেনো কেউ এধরণের কাজ করার সুযোগ ও সাহস না পায় সে ব্যবস্থা করা হোক।

-মিজানুর রহমান, সভাপতি বাংলাদেশ পথ নাটক পরিষদ।