ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি অবহেলার প্রতিফলন রাষ্ট্রকে বহুদিন বহন করতে হবে
——-অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন
শিক্ষা যে কত অবহেলিত তার একটা ছোট উদাহরণ দেই। ২০১৬ সালে কোন কলেজ থেকে কোন প্রকার দাবি দাওয়া ছাড়াই ৩০৩টি কলেজকে সরকারি করার জন্য নির্বাচন করা হয়। এরপর পাঁচ বছর পেরিয়ে গেছে। এই ৫ বছর সময়ে মাত্র একটি কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা আত্তীকৃত হয়ে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন। আর বাকি ৩০২ কলেজের শিক্ষকেরা এখনো অনিশ্চয়তায়। অথচ এর মধ্যে ১৫০০-রও বেশি শিক্ষক-কর্মচারী অবসরে চলে গেছেন এবং প্রতিদিন এই তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। সরকারি করণের প্রক্রিয়াধীন থাকার কারণে যারা অবসরে চলে গিয়েছেন তাদের জায়গায় নতুন কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি আবার সরকারিকরণের প্রক্রিয়াধীন থাকায় কলেজ কর্তৃপক্ষও নিজেরা নিয়োগ দিতে পারছেন না। এতে এতগুলো কলেজে শিক্ষা কার্যক্রম একপ্রকার বন্ধ্যাত্ব অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারো কোন ভ্রূক্ষেপ নাই। কলেজ শিক্ষক সমিতির নেতারাও এইসব কোন কথা বলেন না কারণ তারাতো পর্তা মিলিয়ে চলে অনেক সুবিধা পান।
আমি সব সময়ই বলি আমাদের শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের বেহাল দশার মূল কারণ মন্ত্রণালয়। এরা ব্যস্ত নিজেদের আখের গোছানো নিয়ে। অথচ একটি দেশের এই দুটি ক্ষেত্র সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এইসবের গুরুত্ব বোঝে কিনা আমার সন্দেহ। আর যদি বুঝেই থাকে তাহলে তারা ডাবল ক্রাইম করছে। কিন্তু কে করবে কার বিচার? এই দেশে কোথাও কোন জবাবদিহিতা আছে? এইদুটি খাতে যেই পরিমান দুর্নীতি হয় তা নজরবিহীন। আলোচ্য বিষয়টি দুর্নীতির চেয়েও বড় বিষয় হলো এইটা অমানবিক, রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি অবজ্ঞা ও অবহেলার প্রতিফলন যার জের রাষ্ট্রকে বহুদিন বহন করতে হবে। ফেসবুক থেকে নেওয়া।