চিত্র নায়িকা পরীমণির মামলায় নাসির ও অমির জামিন

চিত্র নায়িকা পরীমণির মামলায় নাসির ও অমির জামিন

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলচ্চিত্র অভিনেত্রী পরীমণিকে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাভার থানায় দায়ের করা মামলায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিকে জামিন দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার ঢাকার সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহজাদী তাহমিদার আদালত পাঁচ হাজার টাকার মুচলেকা নিয়ে জামিন আবেদন মঞ্জুর করে এই আদেশ দেন। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখা থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার থানার পরিদর্শক মো. কামাল হোসেন এই দুই আসামিকে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করেন। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ তার বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের ৫ হাজার টাকা মুচলেকায় আগামী ধার্য তারিখ পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।

তবে এ মামলায় জামিন পেলেও এখনই মুক্তি পাচ্ছেন না তারা। তাদের বিরুদ্ধে আরও মামলা রয়েছে। ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের আইনজীবী মো. আমানুল করিম লিটন বলেন, তাদের বিরুদ্ধে যে মাদক মামলাটি রয়েছে সেটিতে জামিন পেলে তারা মুক্তি পাবেন।

তিনি আরও বলেন, নাসির সাহেব একজন অমায়িক বয়স্ক লোক। ওনাকে আমি দীর্ঘদিন ধরে চিনি। তিনি এ জাতীয় কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এটা কখনোই শুনিওনি, বুঝিওনি। অন্যায়ের যে পরাজয় হয়, ন্যায়ের যে জয় হয় সেটা আজ আদালতে আবারও প্রমাণ হলো।

নাসির উদ্দিনের যে জামিনটা দিয়েছেন, উনি একজন বিবেচক আদালত। উনি বুঝতে পেয়েছেন যে, এই মামলাটি ফলস অ্যান্ড ফেব্রিকেটেড। এখানে কোনও মেডিক্যাল সার্টিফিকেট নেই, কিচ্ছু নেই। ৯ এর ৪ ধারায় মামলা হতে হলে যে ইলিমেন্টসগুলো থাকতে হয় তার কিছুই এই মামলাতে নেই। তারপরও তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিলো, জিজ্ঞাসাবাদে কিছুই পাওয়া যায়নি। আজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও শুনানিতে সন্তুষ্ট হয়ে তাদের জামিন দিয়েছেন।

ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী উল্লেখ করে এই আইনজীবী আরও বলেন, তার মতো এমন বিশিষ্ট ভদ্রলোক এখনকার সমাজে খুঁজে পাওয়া খুবই কষ্টকর এবং সেই লোকটাকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার জন্য এমন একটা কাজ করা হয়েছে।

এটা গর্হিত কাজ করা হয়েছে, অন্যায় করা হয়েছে এবং সেই অন্যায়ের সঠিক বিচার আমরা চাই। রাষ্ট্রপক্ষ যেমন বিচার চায়, আমরা আসামিপক্ষও বিচার চাই, সঠিক তদন্ত হওয়া দরকার। এই মামলাটির চূড়ান্ত রায় আসার পর বাদির বিরুদ্ধে ২/১১ ধারায় মামলা হওয়া উচিৎ। যেন ভবিষ্যতে কেউ মিথ্যা মামলা করতে না পারে।

আসামিপক্ষের আরেক আইনজীবী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া, আদালত বিষয়টি অবজার্ভ করেছেন, একটা অভিযোগ দিলেইতো হবে না; অভিযোগের সাপোর্টিং এভিডেন্স থাকতে হবে; মেডিক্যাল এভিডেন্স সেখানে ছিলো না, আদৌ যে পরীমণির মুখে মদের বোতল ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে, এ বিষয়টি যদি বাস্তবে হয়ে থাকতো, তাহলে পুলিশ ইন্টারোগেট করতো এবং এটার একটা রিপোর্ট থাকতো।

এ বিষয়ে কোথা তথ্যাদি আদালতে এখন পর্যন্ত নাই। মামলার মেরিটের উপর বিবেচনা করে বিজ্ঞ আদালত ন্যায় বিচার করেছেন এবং ৫ হাজার টাকা বন্ডে জামিন মঞ্জুর করেছেন আগামী ধার্য তারিখ পর্যন্ত।

আগামী ধার্য তারিখ কবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামী ধার্য তারিখ কবে সেটা আদালত পরে জানাবেন।

গত ১৪ জুন ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমির নাম উল্লেখ করে মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন চিত্রনায়িকা পরীমণি। সেই মামলায় উত্তরার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তিন নারীর সঙ্গে তুহিন সিদ্দিকী অমিকেও গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।