সরকারি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা এনজিওর হাতে দেওয়ার প্রস্তাব চক্রান্ত: রাশেদ খান মেনন
নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা এনজিওদের হাতে ন্যাস্ত করার প্রস্তাবনাকে আমলাতন্ত্রের চক্রান্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পাটির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। একইসঙ্গে সরকারি এই প্রস্তাবনাকে আত্মঘাতী হিসেবেও উল্লেখ করেন তিনি।
রোববার অনুষ্ঠিত দলটির পলিটব্যুরোর ভার্চুয়াল সভায় এসব কথা বলেন রাশেদ খান মেনন। এতে সভাপতিত্বও করেন তিনি।
তিনি বলেন, সরকারি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা এনজিওদের হাতে ন্যাস্ত করার সরকারি প্রস্তাবনা আত্মঘাতী ও ষড়যন্ত্রমূলক। কায়েমি স্বার্থ বাস্তবায়নের সুদূরপ্রসারী লক্ষে আমলাতন্ত্র এই চক্রান্ত সাজিয়েছে।
সভায় আরও বলা হয়, স্বাস্থসেবার মানোন্নয়নের কথা বলে সরকারের এই তুঘলকি সিদ্ধান্ত অবৈজ্ঞানিক ও জনগণকে বোকা বানানোর শামিল। করোনা মহামারি আমাদের স্বাস্থখাতের দুরবস্থা, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছে। তাই স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার আমুল সংস্কার প্রয়োজন ও স্বাস্থখাতের সেবারমান বাড়াতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ বাড়াতে হবে। সরকারি হাসপাতালগুলো মানোন্নয়নের নামে নতুন বেনিয়াদের হাতে ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হলে স্বাস্থসেবা জনগণের নাগালের বাইরে চলে যাবে। তাই এই প্রস্তাব অপরিণামদর্শী ও অগ্রহণযোগ্য।
সভায় মটরচালিত রিকশা তুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলা হয়, করোনার মহামারিতে আড়াই কোটি মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে। ফলে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় অনেক মানুষ জীবিকার তাগিদে রিকশার প্যাডেলে পা দিয়েছে। তাই এসব মানুষের জন্য কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না করে তাদের জীবিকার সম্বল রিকশা গুড়িয়ে দেওয়া নির্দয় ও অমানবিক মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ।
সভায় আরও বলা হয়, সভায় প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবিত মটরচালিত রিকশাকে নিরাপদ ও জনগণের বাহন উপযোগী করে পরিবেশ বান্ধব যাতায়তের ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ এবং বিকল্প ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত রিকশা ও ভ্যান উচ্ছেদ বন্ধের আহবান জানানো হয়।
এদিকে দেশে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়া ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ায় সভায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়ে সভায় বলা হয়, সংক্রমণের বিস্তৃতি গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়েছে। জেলার হাসপাতালে স্থান সংকুলান না হওয়ায় করোনায় আক্রান্ত মানুষের চিকিৎসা বিঘ্ন ঘটছে। পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সকল নাগরিককে দ্রুত ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে। ভ্যাকসিন নিয়ে রাজনীতি ও কূটনীতি পরিহার করে যেকোনো ভাবে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে তা দেশের মানুষকে প্রদানে কর্মসুচির একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ তৈরির জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান নেতারা।
এই সভায় আনিসুর রহমান মল্লিক, সুশান্ত দাস, মাহমুদুল হাসান মানিক, নুর আহমেদ বকুল, কামরূল আহসান, আমিনুল ইসলাম গোলাপ, হাজী বশিরুল আলম, জ্যোতি শংকর ঝন্টু, নজরুল ইসলাম হাক্কানী, নজরুল হক নীলু, এনামুল হক এমরান বক্তব্য রাখেন।