——–সত্য
——-সুদীপ চন্দ্র হালদার
চেতনায় যখন কল্যাণকামী অদম্য সত্যের বাসনা,
জেনে রেখ, ঈশ্বরের নিশ্চিন্ত বাস তব হৃদয়ে তক্ষুনি,
চেতনায় যখন অপ্রসন্নতায় ভরপুর নেতিবাচকতা,
বুঝে নিও, শয়তান-কলি বসতি গড়িছে হৃদয়ে তব।
সত্যের চেয়ে বড় ধর্ম নেই-সত্যান্বেষী মহাত্মার বাণী,
সত্য-মিথ্যার মিশ্রণের কল্যাণ ছুড়েছেন সদা স্বামীজি,
চোখের ইশারার সংকেতে মিথ্যার প্রলোভন ছাড়িছে,
‘আল-আমিন’, উচ্চারণে মিথ্যা তো বহুক্রোশ দূরবর্তী।
মিথ্যার অপর নাম হয় অপমান, নয়কো অন্য তব;
নিজের তেজোময় চেতনা-বিবেকের অপমান বীরের,
মিথ্যা সে তো কাপুরুষের হয় ধব্জা, রক্ষিতে লেবাস,
বীর সে তো বীর, নির্ভীক চিত্তে যার সত্যের ঝঙ্কার সদা।
ভয়-স্বার্থ-উদ্বেগ-পরপীড়ন হতে মিথ্যার উদ্ভব জানিও,
অকল্যাণকামী কাপুরুষেরা সদা মিথ্যার আশ্রয় লয়,
বীরের কি আছে সেই হেরি ভয় যে মিথ্যা বলতে হয়,
নিঃস্বার্থ-নিরুদ্বেগ-হিতকারী বীরের সত্য তাই ধর্ম হয়।
দস্যু নিবৃত্তিতে কভু প্রাণে বাঁচে যদি অসহায় পথিক,
আপদ ধর্মের আপাত ব্যাখ্যা শুধু তথায় সুন্দর হয়,
বীরের নিজ রক্ষাকবচ কভু নাহি হয় আপদ ধর্মত্তত্ব,
বুক চিতিয়ে মরে বীর সত্যের চেতনায় জেনে নিও।
সত্যের স্বীকারে ক্ষুদিরাম বীর, ইতিহাস করে কুর্নিশ,
নির্বিকার নিরুত্তাপ সত্যের ধারণে জগদ্বিখ্যাত ইউসুফ,
উড়িয়ে সত্যের নিশান বিনয়-বাদল-দীনেশ রহে অমর,
বীর মুক্তিযোদ্ধার কল্যাণময় সত্যে স্বাধীন বাংলাদেশ।
কারো খুশি-অখুশিতে নেইতো সত্যের কভু মলিনতা,
মিথ্যার প্রাচুর্যে হৃদয়ে তব জাগে যদি সুখের বারতা,
জেনে নিও, আত্মাকে কলুষিত করেছ নিজ কর্মগুনে,
সূর্যসম তেজোময় হয় সদা সত্য, নহে কভু আলেয়া।
সৃষ্টি-কল্যাণ-তেজের প্রকাশ ঘটে সদা সত্যের বিকাশে,
নয়তো ছলনাময়ীর ছলনা আর গুয়েবলেতিয় প্রচারে;
সত্যের জয় হয় চিরদিন, তবু নাহি ভাবে বীর তথা,
অদম্য সত্যের চেতনায় বলীয়ান বীর সদা কল্যাণকামী।
খোল হৃদয় দুয়ার, মুছে দাও বিবেকের ময়লা যত,
জগতের দিকে দিকে দেখ সত্য কল্যাণের জয়গান,
ক্ষনিক আলেয়ার ঝলকানিকে বিজয় ভাবে কাপুরুষ,
জানে নাকো, সত্যের বিজয় নিশান চির ভাস্বর জগতে।