পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের চুক্তির শর্তসমূহের পরিবর্তনসহ ১১ প্রস্তাব অনুমোদন

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের চুক্তির শর্তসমূহের পরিবর্তনসহ ১১ প্রস্তাব অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক: পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের চুক্তির শর্তসমূহের পরিবর্তনসহ বিভিন্ন খাতের ১১টি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে সরকার। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সেতু বিভাগের করা চুক্তির কয়েকটি শর্তের পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে এই প্রস্তাবে চুক্তির মূল্য বা অন্য কোনো বিষয়ে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

বুধবার এক ভার্চ্যুয়াল সভায় ক্রয় প্রস্তাবগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সভায় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন। সভা শেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেডের (সিআরইসি) সঙ্গে স্বাক্ষরিত কমার্শিয়াল চুক্তির পিসিসি (পার্টিকুলার কন্ডিশন অব কন্ট্র্যাক্ট) এবং পেমেন্ট সিডিউলের সাপ্লিমেন্টারি চুক্তিতে ৯টি পিসিসি ক্লজের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা থেকে কেরানীগঞ্জ ও পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রকল্প। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ভাঙ্গা থেকে মাওয়া অংশ আগে সম্পন্ন করার পরিকল্পনা নিয়েছে।

এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে দুই দফা ব্যয় বেড়েছে। বাড়তি ব্যয়ের অভিযোগ প্রকল্পের শুরু থেকেই। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে চীনের সঙ্গে জিটুজি ভিত্তিতে। ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে চীনের চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড (সিআরইসি)। ২০১৬ সালে চুক্তি হলেও কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের দিকে। এ জন্য পদ্মা সেতু দিয়ে একই দিনে যানবাহন ও ট্রেন চলাচল শুরুর বিষয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। ২০২৪ সালে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা।

সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় অনুমোদিত প্রস্তাবগুলো হলো: ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন (২য় পর্যায়)’ প্রকল্পের আওতায় ৫ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ল্যাবের জন্য ৫ হাজার ইন্সট্রাক্টর টেবিল, ৫ হাজার ইন্সট্রাক্টর চেয়ার, ৮০ হাজার কম্পিউটার টেবিল এবং ১ লাখ ৬০ হাজার কম্পিউটার চেয়ার সংগ্রহ, সরবরাহ ও স্থাপন কাজ। হাতিল কমপ্লেক্স লিমিটেড (১টি লট), আরএফএল প্লাস্টিকস লিমিটেড (২টি লট), আকতার ফার্নিচার লিমিটেড (৩টি লট) এবং পারটেক্স ফার্নিচার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের (১টি লট) কাছ থেকে ১০১ কোটি ২৮ লাখ ৪ হাজার ৩৬ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এম/এস এক্সিলেটার এনার্জির কাছ থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজিসহ সর্বমোট ৩১৩ কোটি ৬৮ লাখ ৯৭ হাজার ৬৮০ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) মাধ্যমে নানা প্যাকেজে সর্বমোট ১২ লাখ ৩৫ হাজার মে.টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল ৫ হাজার ৭ শ’ ৭৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে ৭৭ কোটি ৬৫ লাখ ৩২ হাজার ৭৯৬ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশন কর্তৃক কর্ণফুলি শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডে চট্টগ্রামের কাছ থেকে ২৩১ কোটি ১৩ লক্ষ ৯৭ হাজার ৭২৬ টাকায় ৩টি প্যাসেঞ্জার ক্রুস ভ্যাসেল সরবরাহ ও নির্মাণ কাজ ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) কর্তৃক ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কাফকো, বাংলাদেশ হতে ৮৭ কোটি ৬৩ লাখ ৬৫ হাজার ৪৩৭ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কর্তৃক অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থায় মোটরযানের কর ও ফি আদায়ের জন্য সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে ২১৮ কোটি ৭১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ৫ বছরের জন্য নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

‘কুড়িগ্রাম (দাসেরহাট)-নাগেশ্বরী-ভুরুঙ্গামারী-সোনাহাট স্থলবন্দর সড়ককে জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের প্যাকেজের পূর্ত কাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও ‘বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যায়ের অধিকতর উন্নয়ন’ প্রকল্পের প্যাকেজের নির্মাণ কাজের ক্রয় প্রস্তাব পুনঃপ্রক্রিয়াকরণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।