রেলমন্ত্রীর বিয়ে নিয়ে মনের কিছু কথা : মিজানুর রহমান

রেলমন্ত্রীর বিয়ে নিয়ে মনের কিছু কথা : মিজানুর রহমান

মিজানুর রহমান: মাননীয় রেল যোগাযোগ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বিয়ে করেছেন গত ৫ জুন ২০২১। মাননীয় মন্ত্রী সরকারের দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত থাকা অবস্থায় ৬৫ বছর বয়সে বিয়ের পীড়িতে বসলেন। তা দেশের মানুষ কিভাবে নেবেন তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো উনার জন্য বিয়েটা কতটা প্রয়োজনীয় ছিলো তা ভাবা। কারণ উনার স্ত্রী ২০১৮ সালে মৃত্যু বরণ করলে তিনি নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করছিলেন।

উনার তিন ছেলে-মেয়ে বড় হয়ে বিয়ে করে ঘর সংসার পেতেছে। কর্মব্যস্ত জীবনে যদি নিঃসঙ্গতা কাটাতে তিনি বিয়ে করেন সেটি স্বাভাবিক ও সুন্দরই বটে। নিঃসঙ্গ একাকিত্ব কাটাতে কেউ বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলে বাধা না দিয়ে সমালোচনা না করে সমথর্ন করে সহযোগিতা করা উচিত। অন্যথায় অনৈতিকতা অসততা ও পাপাচারের সম্ভাবনা থাকে।

মানব সমাজে গুরুত্বপূর্ণ হলো নৈতিক যুগলজীবন। যদি কারো ক্ষেত্রে এর ব্যতয় হয় সেটি ব্যতিক্রম হিসেবে বিবেচিত হবে। যুগল জীবনে সুখ শান্তিতে বসবাসই হলো জাগতিক শুদ্ধাচার।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনন্য,মনপ্রাণ উজার করে ভালোবাসতে পারা মহৈষী মাতা। পুরোনো ঢাকার চুরিহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে স্বজন হারিয়ে অকুলে ভাসা তিনকন্যার দায়িত্ব নিয়ে তিনি মায়ের আদরে বিয়ে দিয়ে অভূতপুর্ব প্রশংসনিয় দৃষ্টান্ত স্হাপন করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উনার মন্ত্রী পরিষদের প্রবীনতম সদস্য তৎকালীন পররাষ্ট্র মন্ত্রী বিপত্নীক আবদুস সামাদ আজাদ সাহেবের বিয়েকেও ইতিবাচক মনোভাবে গ্রহন করে উদাহরণ সৃষ্টি করে ছিলেন।

তবে গত কয়েক বছরের মধ্যে আলোচনার ঝড় তুলে ছিল তৎকালীন রেল যোগাযোগ মন্ত্রী এডভোকেট মুজিবুল হকের বিয়ে। তিনি চিরকুমার সভার গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা অবস্থায় ৬৭ বছর বয়সে বিয়ে করেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তে চিরকুমার সভা সাংগঠনিক ভাবে ক্ষতি গ্রস্হ হলে তাঁরা মাননীয় মন্ত্রীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেন। তবে তাদের সাংগঠনিক চর্চার সৌন্দর্য্য হলো, নবদম্পতির সুখী ও সমৃদ্ধ জীবন কামনা করে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগদান।এই বিয়ে নিয়ে তুমুল ঝড় তুলা আলোচনায় জলঢেলে দিয়ে ছিলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচক মনোভাব।

বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি লোকসানী প্রতিষ্ঠান। এর শরীরিকাঠামো একেবারেই নিজস্বতায় অনন্য। সাধারণের মুখে মুখে উচ্চারিত হওয়া বৈশিষ্ট্য হলো সমান্তরাল চলা আর ইঞ্জিন বগীর যুগলযাত্রা। আর সে কারনেই হয়তো রেলমন্ত্রীকে এই বিষয় গুলো ভাবায়। মন্ত্রী মহোদয়ের কানে বাজে জনপ্রিয় গান “দুই ভূবনের দুই বাসিন্দা আমরা চিরকাল -রেল লাইন বহে সমান্তরাল “- আর চোখের সামনে ভাসে ইঞ্জিন বগীর সৌহার্দ্যপূর্ন সম্পর্ক।

একসাথে থাকা আর মনের আনন্দে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে চলাই তাদের সৌন্দর্য্য। এই দেখে মাননীয় মন্ত্রী সাহসী হোন,লোক লজ্জা ও সমালোচনাকে কাটিয়ে সাহসী সিদ্ধান্তে পৌঁছান।

অনিবার্য পরিণতির দিকে আমরা ধাবমান। তারপরও যুগলবন্দী বাকী জীবন কাটানোর সিদ্ধান্ত প্রশংসার দাবি রাখে। অবলীলায় বলতে হয় মাননীয় রেলমন্ত্রী আপনার সিদ্ধান্তটি সুন্দর ও ইতিবাচক,আপনি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হোন। সস্ত্রীক দীর্ঘজীবি হোন। আপনার উপর অর্পিত দায়িত্ব সততা নিষ্ঠার সাথে পালন করে সাধারণ মানুষের পাশে দাড়িয়ে যিনি আপনাকে দায়িত্ব দিয়েছেন তাঁর আস্থার প্রতিদান দিন।

লেখক : মিজানুর রহমান , সভাপতি বাংলাদেশ পথ নাটক পরিষদ।

স/এষ্