বিশ্বে মহামারি করোনায় সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিন ছিল গতকাল মঙ্গলবার। ওইদিন ১০ হাজার ৮১৬ জন কোভিড-১৯ রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। এর আগে একদিনে এত মৃত্যু দেখেনি বিশ্ব। শুধু মৃত্যু নয় চলতি মাসের বেশিরভাগ দিনই দৈনিক আক্রান্তের রেকর্ড হয়েছে। শঙ্কা করা হচ্ছে, পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, শীতের আগমনে বৈশ্বিক করোনা প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্র যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত ও মৃত্যু বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্য চলতি মাসে রেকর্ড করোনা সংক্রমণ প্রত্যক্ষ করেছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয় দুই আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলোতেও ভাইরাসটির সংক্রমণ এখন ঊর্ধ্বমুখী।
রয়টার্সের হিসাব অনুযায়ী এর আগে বিশ্বে একদিনে করোনায় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছিল গত ৪ নভেম্বর; ১০ হাজার ৭৩৩ জন। আর এই ভাইরাসটিতে সবচেয়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র। সবশেষ হিসাব বলছে, দেশটিতে এ পর্যন্ত ১ কোটি ১৩ লাখ ৮০ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ২ লাখ ৪৮ হাজার ৫৭৪ জন।
এ ছাড়া বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে নতুন করে গড়ে যত মানুষ করোনায় প্রাণ হারাচ্ছেন এখানেও শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিদিন বিশ্বে করোনায় প্রাণ হারানো প্রতি ১২ জনের একজন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়েবেশি প্রাণহানি যথাক্রমে ব্রাজিল ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৯ এবং ভারত ১ লাখ ৩০ হাজার ৯৯৩ জন।
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষদিকে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের রাজধানী শহর উহান থেকে প্রাদুর্ভাব ছড়ানোর পর এ পর্যন্ত করোনায় যত মানুষের মৃত্যু হয়েছে এর মধ্যে এক-চতুর্থাংশ ইউরোপের। মহাদেশটিতে করোনায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে যুক্তরাজ্যে। একমাত্র যুক্তরাজ্যে প্রাণহানি ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে।
ইউরোপে যুক্তরাজ্যের পর করোনায় সর্বোচ্চ মৃত্যুর দিক থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ইতালি ৪৬ হাজার ৪৬৪ জন এবং ফ্রান্স ৪৬ হাজার ২৭৩ জন। গত রোববার আবারও আইসোলেশনে গেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এর আগে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল তাকে।
এদিকে ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে গত মঙ্গলবার ফ্রান্সে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বিশ লাখ ছাড়িয়েছে। শুধু যুক্তরাজ্য আর ফ্রান্স নয় মহামারি এই ভাইরাসটির ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ঠেকাতে ইউরোপের বেশিরভাগ দেশের সরকার ফের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বিধিনিষেধ, কারফিউ ও লকডাউন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।