দেশকে রক্ষার জন্য সমস্ত তরুণকে এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে: মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘পৃথিবীতে বহু কিছুর পরিবর্তন হয়েছে। আন্দোলন ও বিপ্লবের মাধ্যমে যা অর্জিত হয়েছে, তা তরুণ ও যুবকদের ছাড়া হয়নি। এ মঞ্চে যারা বসে আছেন তারা ৯০-এর আন্দোলনের ছাত্র ও নারীনেত্রী ছিলেন। ৭১-এর আন্দোলনের সময় আমরা তরুণ ছিলাম। লড়াই করেছি, সংগ্রাম করেছি। দেশ স্বাধীন করেছি।’
‘আজ কোথায় সেই তরুণ, কোথায় সেই যুবক? দেখছি না তো। ব্যর্থতাটা আমাদের ওই জায়গায়। আমি অত্যন্ত জোরেশোরে বিশ্বাস করি, আমাদের ব্যর্থতা ওই জায়গায়, আমরা এখন পর্যন্ত তরুণদের ঐক্যবদ্ধ করে সামনে নিয়ে আসতে পারিনি। আসুন আমরা সবাই ওই কাজটা করি। শুধু ছাত্রদল-যুবদল নয়, দেশকে রক্ষার জন্য, স্বাধীনতাকে রক্ষার জন্য, অধিকার আদায়ের জন্য দেশের সমস্ত তরুণকে এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে। আমরা যখন ছাত্র তখন আইয়ুব খানের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য এগিয়ে এসেছিলাম। তাই আসুন, তরুণ-যুবকদের ঘর থেকে বের করে নিয়ে আসি।’
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে মুক্তিযোদ্ধা দল।
‘বিএনপি জাতীয় ঐক্য সৃষ্টিতে কাজ করছে’ মন্তব্য করে সাবেক এ প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে আমরা কাজ করছি। চেষ্টা করছি সব রাজনৈতিক দলকে এক করতে, এক জায়গায় নিয়ে আসতে। জোট না হোক, যুগপৎ আন্দোলন করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।
ড. জাফরুল্লাহর নাম উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখানে আসার আগে তিনি গিয়েছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। কেন গিয়েছিলেন জানেন? টিকা বিক্রির প্রস্তাব নিয়ে। এর আগে তো তার কিট নেয়নি সরকার। বাতিল করে দিয়েছে। এবারও নেবে না। কারণ তাদের (সরকার) যে উদ্দেশ্য তা সফল হবে না। কারণ, তারা কোভিড নিয়ে ব্যবসা করছে। এটাকে নিয়ে তারা প্রথম থেকেই ব্যবসা শুরু করেছে। তাদের উপদেষ্টার কথায় অগ্রিম ৭০০ কোটি টাকা দিয়েছে তিন কোটি টিকা আনার জন্য। এখন দেড় কোটি টিকাও পায়নি। একটা প্রাণী আছে, গাধা, ঘোলা করে পানি খায়। এ সরকারও তা-ই।’
‘টিকার জন্য চীন ও রাশিয়া যখন বলেছে আমার সঙ্গে চুক্তি কর, তখন সরকার করেনি। এখন তাদের পিছে পিছে ঘুরছে। সরকার বলছে টিকার জন্য চীনের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। কিন্তু চীন বলছে কোনো চুক্তি হয়নি। তোমরা মিথ্যা কথা কেন বলছ?’
‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সুন্দর সুন্দর কথা বলেন’ উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নিঃসন্দেহ আমরা তার কথার প্রতি আকৃষ্ট হই। তিনি বলেছেন, বিএনপি নাকি গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। কিন্তু তার কথা কেউ বিশ্বাস করতে চায় না। আওয়ামী লীগ সব সময় ডাবল স্ট্যান্ডার্ডে থাকে। তার মুখে এক কথা, কাজে অন্যটা। তারা কোনো দিন গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেনি। তারা বিরোধী দলে থাকলে গণতন্ত্রের কথা বলেন, আর ক্ষমতায় গেলে হত্যা করেন।’
‘খালেদা জিয়া দেশ থেকে স্বৈরচার বিতাড়িত করতে সফল হয়েছেন’ দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা (সরকার) জানে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে দিলে তার ডাকে লাখ লাখ মানুষ নেমে আসবেন। এ কারণে মিথ্যা মামলায় তাকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছে।’
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ইশতিয়াক আজীজ উলফাত, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।