প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষাখাতে কর আরোপ অদূরদর্শী ও অনৈতিক: ন্যাপ

প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষাখাতে কর আরোপ অদূরদর্শী ও অনৈতিক: ন্যাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে প্রাইভেট কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ১৫ শতাংশ কর আরোপের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ)।

শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া এ দাবি জানান।

তারা বলেন, রাজস্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে টিউশন কর আরোপ করা সরকারের দীর্ঘমেয়াদী ভিশনের সঙ্গে সম্পূর্ণ সংঘাতপূর্ণ এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অপরিণামদর্শিতারই প্রমাণ। শিক্ষার্থীদের ওপর করের বোঝা চাপানো নৈতিকতার পরিপন্থী।

নেতারা বলেন, শিক্ষার ওপর কর আরোপের ফলে বেসরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেশি ফি দিতে হবে। করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন। অনেক শিক্ষার্থীর পরিবার আর্থিক সংকটে রয়েছে। এ অবস্থায় বর্ধিত ফির বোঝা বহন করা শিক্ষার্থীদের পক্ষে অসম্ভব। এর আগেও সরকার ২০১০ ও ২০১৫ সালে বেসরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফির ওপর করারোপ করেছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পরবর্তীতে তা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়। তাই আন্দোলনের ভয়ে সরকার এবার টিউশন ফির ওপর সরাসরি করারোপ না করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভূত আয়ের ওপর করারোপের প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এসব প্রতিষ্ঠানের আয়ের ওপর করারোপ করলে মালিকপক্ষ তা ফি বাড়ানোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেই আদায় করবে। ফলে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদেরই পকেট কাটা হবে।

তারা বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষা ব্যবস্থার চরম বেহাল অবস্থা, ঠিক তখনই প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ কর আরোপের প্রস্তাব করে সরকার কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিচ্ছে। দেশে সরকারিভাবে পর্যাপ্ত উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীরা তুলনামূলক বেশি টাকা ব্যয় করে পড়াশোনা করছেন। কিন্তু সেখানে সরকারের লোভাতুর দৃষ্টি সচেতন ছাত্র সমাজসহ তাদের অভিভাবকদের চরম সঙ্কটের মধ্যে ঠেলে দেবে।

নেতারা বলেন, রাষ্ট্রের কর্তব্য বিনামূল্যে সবার জন্য একমুখী শিক্ষার ব্যবস্থা করা। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ও তা পরিচালনা করা। কিন্তু সরকার সে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ায় গড়ে ওঠেছে বহু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। সেখানে ছাত্রদের টাকার বিনিময়ে পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। সেটা ছাত্রদের জন্য নিঃসন্দেহে কষ্টকর। কিন্তু এ কর আরোপের ফলে শিক্ষা ব্যয় নতুন করে বাড়লে বহু শিক্ষার্থী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও আর পড়তে পারবে না। একদিকে রাষ্ট্র দিন দিন ফি বাড়িয়ে সমাজের নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের শিক্ষা থেকে দূরে রাখতে চাইছে। আবার একইসঙ্গে আন্দোলন রোধ করার জন্য ভিন্ন নামে এ কর আরোপের কাজ করছে।এস/এ