উপকূলীয় মৎস্য ঘেরে শসার বাম্পার ফলন, ভাল দাম পেয়ে খুশি চাষী
এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট ।। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের উপকূলীয় মৎস্য ঘেরের ভেড়িতে বাগেরহাটেচলতি মৌসুমী শসার বাম্পার ফলন হয়েছে। ভাল দাম পেয়ে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে।
জেলার নয়টি উপজেলায় সবজি ক্ষেতে ও মৎস্য ঘেরের পারে বিপুল পরিমাণ শসার চাষ হয়েছে। প্রতিদিন এই জেলা থেকে শতাধিক ট্রাকে শসা যাচ্ছে দেশের বড় শহর গুলোতে। নিজ বাড়ির সামনে বসে নায্যমূল্যে ব্যবসায়ীদের কাছে শসা বিক্রি করতে পেরে খুশি কৃষকরাও।
কৃষকরা জানান, শসা একটি স্বল্প সময়ের সবজি। বিজ রোপণের ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে ফল আসে। ফল আসার পরে ৩৫ থেকে ৪০ দিন পর্যন্ত গাছে ফল দেয়। পরিচর্যা এবং প্রয়োজনীয় সার দিলে এক একর জমি থেকে প্রতিদিন ৬ থেকে ৯ মন পর্যন্ত শসা বিক্রি করা যায়।
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী জেলার বাগেরহাট কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৯টি উপজেলার চিতলমারী মোল্লাহাট ফকিরহাট মংলা রামপাল বাগহাট কচুয়ায় মোরেলগঞ্জ ও শরনখোলা উপজেলায় শসার বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে এর মধ্যে সব থেকে বেশি শসা উৎপাদন হয় মোরেলগঞ্জ উপজেলায়।
এই উপজেলা থেকে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাকে করে শসাসহ বিভিন্ন সবজি যায় দেশের বড়বড় শহরে। এবছর ৯০ হাজার টনের বেশি শসা উৎপাদন হবে এই জেলায়। জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় এই শসা যাচ্ছে কোন প্রকার দালাল ছাড়া সরাসরি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করায় কৃষকরাও লাভবান হচ্ছেন।চিতলমারী উপজেলার উমাজুরি গ্রামের মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এক একর জমিতে শসার চাষ করেছি। গেল দশ দিন থেকে বিক্রি শুরু করেছি। প্রতিদিন ৫ থেকে ৮ মন পর্যন্ত শসা বিক্রি করি। এবার ফলনও যেমন বেশি হয়েছে।দামও মোটামুটি ভাল পাচ্ছি।’
১৩ নং নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের গুয়াতলা গ্রামের মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের ছেলে শসা চাষকারী কৃষক সাব্বির হোসেন সুমন সহ কয়েক জন বলেন, বিভিন্ন সবজির বীজ বপন করেছি। আবহাওয়া অনুকুল থাকায় এবার শসার ফলন খুব ভাল হয়েছে। জেলা কৃষি বিভাগও আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছেন। পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে ১৩থেকে ১৫ টাকা কেজি অথবা ৫‘শ থেকে ৬‘শ টাকা মন বিক্রি করছি। এরকম দাম থাকলে এবার আমাদের মোটামুটি ভালই লাভ হবে।
চিতলমারী উপজেলার অশোকনগর গ্রামের বিশ্বজিত বড়াল বলেন, ‘এবছর ১০ একর জমিতে শসার চাষ করেছি। তিন লাখ টাকা ব্যয় করেছি। বর্তমানে প্রতিদিন একশ মনের উপরে শসা বিক্রি করছি। আমার কৃষিতে ও মাছের ঘেরে নিয়মিত আটজন শ্রমিক কাজ করেন।সব খরচ দিয়ে এবছর শসায় দশ লক্ষাধিক টাকা লাভ হবে বলে মনে করছি ‘
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শঙকর কুমার মজুমদার বলেন, ‘বাগেরহাট জেলায় সবজি আবাদের উপর অতিরিক্ত জোর দেওয়া হয়েছে। সরকার সময়মত বীজ, সার ও ঋণ প্রবাহ সচল রেখেছেন। যার ফলে এবছর বিভিন্ন সবজি বিশেষ করে শসার বাম্পার ফলন হয়েছে। এছর বাগেরহাটের কয়েকটি উপজেলায় ৯০ হাজার টন শসার ফলন হবে। আমরাও কৃষকদের সব ধরণের কারিগরি সহযোগিতা ও বাজারজাত করণের পরামর্শ দিয়েছি।যাতে কৃষকরা লাভবান হতে পারে সেজন্য আমাদের সব ধরণের চেষ্টা রয়েছে।
স/এষ্