বাগেরহাটে পানগুছি নদীর ভাঙনে রাস্তার বেহাল দশা 

বাগেরহাটে পানগুছি নদীর ভাঙনে রাস্তার বেহাল দশা

এস. এম সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট ।। বাগেরহাটের পানগুছি নদীর ভাঙনে দিন দিন বদলে যাচ্ছে উপকূলীয় উপজেলা মোরেলগঞ্জের মানচিত্র। বারইখালী ফেরিঘাট হতে ফুলহাতা অভিমুখি ১০ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা রাস্তা।

নদীর তীরবর্তী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডসহ দু’টি ইউনিয়নের ১০ গ্রামের ৪ হাজার পরিবার দিনে দু’বার জোয়ারের পানিতে ভাসছে। স্থানীয় গ্রামবাসীর দাবি, রাস্তা সংস্কারসহ স্থায়ী বেড়িবাঁধের।

সরেজমিনে মোরেলগঞ্জ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড নদীর তীরবর্তী ফেরিঘাট সংলগ্ন ১ কিলোমিটার আরসিসি ঢালাই রাস্তাটি বিভিন্ন স্থান থেকে ভেঙে গিয়ে খানাখন্দে পরিণত হয়ে ২৫০টি পরিবারের এক হাজার মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ হায়ে দাঁড়িয়েছে।

একইভাবে বারইখালীর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বারইখালী, জালিয়াঘাটা, তুলাতলা, উত্তর সুতালড়ী ও সীমান্তবর্তী বহরবুনিয়া ইউনিয়নের বহরবুনিয়া, এসবি করা বাজার, ফুলহাতা, উত্তর ফুলহাতা, ঘষিয়াখালীসহ ১০ গ্রামের মানুষের যাতায়াতের জন্য ১০ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে সাড়ে তিন কিলোমিটার এসবিবি রাস্তা, দেড় কিলোমিটার কার্পেটিং রাস্তা এবং পাঁচ কিলোমিটার মাটির তৈরি একাধিক রাস্তা ঘূর্ণিঝড় রিমালের জলোচ্ছ্বাসে বিভিন্নস্থান থেকে ভেঙে গিয়ে নদীতে ভাসিয়ে নেয়। পরবর্তীতে স্থানীয়রা সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি দিয়ে দৈনন্দিন স্কুল, কলেজের শ’ শ’ শিক্ষার্থীসহ ৫-৬ হাজার মানুষ দূর্ভোগ নিয়ে চলাচল করছে।

স্থানীয় বাসিন্দা একলাছ মুন্সি, বাদল তালুকদার, শাহিন জোমাদ্দার, বৃদ্ধ আনোয়ার হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, প্রতিবছরই নদী ভাঙনে জমি যাচ্ছে নদীগর্ভে। নতুন নতুন করে স্থান পরিবর্তন করছি। রিমালে রাস্তা ভাঙলো, মেরামত করার আর কোনো খবর নেই।

জোয়ারের পানিতে দু’বার পানিবন্দি অবস্থায় থাকছি। অনেক সময় রান্না খাওয়া বন্ধ থাকে, এ দুর্ভোগের শেষ কোথায়। ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহিন শেখ বলেন, নদীর তীরবর্তী পুরাতন থানা হতে ফেরিঘাট পর্যন্ত রাস্তাটি একাধিকবার সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবার বন্যা এলেই ভেঙে যাচ্ছে। সকালে বাঁশ খুঁটি দিয়ে রাস্তা বাঁধা হয়।

বিকেলে গিয়ে দেখি পানিতে ভাসিয়ে নিয়েছে। এর একমাত্র সমাধান স্থায়ী বেড়িবাঁধ। এ বিষয়ে বারইখালী ইউপি চেয়ারম্যান আউয়াল খান মহারাজ ও বহরবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রিপন তালুকদার বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালে তাদের দু’টি ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী একাধিক কাঁচা-পাকা রাস্তা বিধ্বস্ত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলো সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন। রাস্তাগুলো নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য তারা জোর দাবি জানান। এ সর্ম্পকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, ফেরিঘাট হতে ফুলহাতা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্তের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

নদী ভাঙনের কারণে এসব রাস্তা প্রতিবছরই ভেঙে যাচ্ছে। বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত স্থায়ী কোনো সমাধানে তারা যাবেন না। রিমালে এ উপজেলায় ৩০০ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত কাঁচা-পাকা ও কার্পেটিং রাস্তার তালিকা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

জরুরি ভিত্তিতে কিছু রাস্তা মেরামত করা হয়েছে। বাকি রাস্তাগুলো পর্যায়ক্রমে সংস্কার করা হবে বলে এ কর্মকর্তা জানান।

স/এষ্