চিকিৎসা সেবায় এগিয়ে কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

চিকিৎসা সেবায় এগিয়ে কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

 

কোটালীপাড়া গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি, সমীর রায়:

উন্নত সেবার এক অনন্য দৃষ্টান্ত গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কোটালীপাড়ার বেশির ভাগ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র কেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি সার্বিক অবকাঠামোর সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি, নিয়ম শৃঙ্খলার উন্নতি ও সেবার মান ব্যপক পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে হাসাপাতালের সেবা নিয়েও এলাকার মানুষ বেশ সন্তোষ্ট।হাসপাতালটি ৫০ শয্য থেকে ১০০ শয্যায় উন্নতি হয়েছে। হাসপাতালে ১৭ জন ডাক্তার, ২৯ জন সেবিকা রুগীদের নিয়মিত সেবা দিচ্ছেন। উপজেলায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা প্রতিদিন কমবেশী প্রায় ৪০০ জন রুগী’র সেবা দিয়ে থাকে বহির্বিভাগ।

 

নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে সিসি ক্যামেরা দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হয়। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর দৃশ্যপট একেবারে পাল্টে দিয়েছেন বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। তিনি এখানে যোগদানের পর থেকে হাসপাতালে রুগীদের সুবিধার্থে স্বল্প খরচে আল্ট্রাসনোগ্রাম থেকে শুরু করে বিভিন্ন পরিক্ষা নিরীক্ষা করা হয়।রোগীর সুবিধা-অসুবিধাসহ সার্বিক বিষয়ে নানামুখী সৃজনশীল কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তাছাড়াও সার্বক্ষণিক এই কর্মকর্তাকে হাসপাতালের কর্মব্যস্থ সময় পার করতে দেখা যায়।

 

সরেজমিন গিয়ে বহির্বিভাগে দেখাতে আসা মিল্টন মধুর সাথে কথা হয়, তিনি বলেন আমার ডায়াবেটিস আছে। এখানে চিকিৎসা নিতে এসেছি।আগে যেতে হতো গোপালগঞ্জে। এখন আর যেতে হয়না। কোটালীপাড়া হাসপাতালে যত্ন সহকারে সেবা পাই। আগের তুলনায় সেবার মান অনেক উন্নতি হয়েছে,পরিবেশও ভালো। এছাড়া আরো কথা হয় বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রাধাগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সর্বানন্দ বৈদ্য,চোখের চিকিৎসা নিতে আসা সানজিদা, আল্ট্রাসনোগ্রাম করাতে আসা সাদিয়া বেগম, নাগরা গ্রামের  ছালেহা বেগম, বাগান উত্তরপাড়ের জি এম জিয়া উদ্দীন, বান্দল গ্রামের  সানজিদা, রাধাগঞ্জ গ্রামের রাজু মিয়াসহ অনেকে বলেন,আগের তুলনায় সেবার মান অনেক উন্নতি হয়েছে। ডাঃ নন্দা সেন গুপ্ত ও অন্যান্য চিকিৎসকরা যত্ন সহকারে সেবা দেন, তাতে আমরা সন্তুষ্ট।

 

হাসপাতাল থেকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ৫০ শয্যার  কোটালীপাড়া  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি১০০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও  ১০০ শয্যার জন্য যে জনবল দরকার তার তুলনায় অনেক কম।২০২১ সালে ভর্তি রোগী ছিল ৭হাজার ৪৯১ জন, জরুরী বিভাগের চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ৪০৪ জন, বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রুগী ছিল ৯১  হাজার ৬৭৩ জন, ২০২২ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৯৬০ জন, ১০ হাজার ৯২২ জন ও ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৮৭৬ জন। এছাড়া  নরমাল ডেলিভারি ও ওটি হয়েছে ২০২১  সালে ২০৭ জন ও ২০২২ সালে বেড়ে হয়েছে ৩২১  জন।

 

 

হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নন্দা সেন গুপ্তা  জানান,দেখেন হাসপাতালটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হিমসিম খেতে হয়।রোগীরা যেখানে সেখানে পানের পিক ফেলায়। বাতরুমে এমন কিছু দ্রব্য ফেলায় যা পরিস্কার করতে সিটি কর্পোরেশন থেকে ১০ থেকে ১২ বার লোক এনে পরিস্কার করতে হয়েছে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা সচেতন হলে আরো ভালো সেবা দিতে পারবো। চিকিৎসা সেবার মান বাড়াতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ের সহযোগিতায় বেশ কিছু কাজ ইতোমধ্যে শেষ করেছি। কিন্তু ১০০ শয্যায় যে জনবল থাকা  দরকার, তা নাথাকায় রুগীদের সেবা দিতে আমাদের হিমশিম হতে হচ্ছে।যদি জনগণ আমাদের সাহায্য করে তাহলে আমাদের লক্ষে পৌঁছেতে পারবো।

 

এস/এ