নতুন অর্থবছরে সংসদ খরচ করবে ৩৩৬ কোটি টাকা
নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন ২০২১-২০২২ অর্থবছরে জাতীয় সংসদের জন্য উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন খাতে ৩৩৬ কোটি ১৪ লাখ টাকার প্রাক্কলিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে পরিচালন ব্যয় ৩৩৫ কোটি ৩৯ লাখ এবং উন্নয়ন ব্যয় ৭৫ লাখ টাকা। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় আগামী অর্থবছরে ৮০ লাখ টাকা (০.২৩ শতাংশ) বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে সংসদের বাজেট ছিল ৩৩৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
অবশ্য বৈশ্বিক মহামারি করোনার সংক্রমণের কারণে চলতি বছরের বাজেটের বড় একটি অংশ খরচ করতে পারছে না সংসদ। ফলে তারা ২২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা কমিয়ে চলতি বছরের সংশোধিত বাজেট নির্ধারণ করেছে ৩১৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এ হিসাবে চলতি বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় আসন্ন অর্থবছরের বাজেট বৃদ্ধি পেয়েছে ৭ দশমিক ১২ শতাংশ।
রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ৩২তম বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, বিরো ধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী বিশেষ আমন্ত্রণে বৈঠকে যোগদান করেন।
সভায় নতুন বছরের বাজেট ছাড়াও চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট অনুমোদন করা হয়। এছাড়াও ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ৩৫৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ও ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য ৩৮৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকার বাজেট প্রক্ষেপণ অনুমোদন করা হয়।
সার্বভৌম প্রতিষ্ঠান জাতীয় সংসদের সংশ্লিষ্টদের বেতন-ভাতাসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রতিবছরই কমিশন বৈঠকে বাজেট বরাদ্দ অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এছাড়া সংসদ সচিবালয়ের নতুন পদ সৃষ্টি, প্রকল্প প্রণয়নসহ বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘গত বছর করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সংসদ সদস্যদের কোনও ভ্রমণ হয়নি। কোনও সংসদ সদস্য এবং কর্মকর্তা ভ্রমণে যাননি। এজন্য বেশকিছু খরচ কম হয়েছে। সেই টাকাটা আমরা ফেরত দিয়েছি।’
স্পিকার বলেন, ‘গত বছর কমিশন বৈঠকে আমরা যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, তার একটি বাদে সবগুলোই বাস্তবায়ন হয়েছে। গতবার আমরা সংসদীয় কমিটির সভাপতির অফিসে টেলিভিশন সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। করোনাভাইরাসের কারণে সেটি সম্ভব হয়নি।’
গত কমিশন বৈঠকে ডেপুটি স্পিকার ও প্রধান হুইপের নিরাপত্তা সংক্রান্ত পুলিশ প্রটেকশনের জন্য ২টি ডাবল কেবিন পিকআপ ভ্যান এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে প্রাপ্ত একটি অ্যাম্বুলেন্স টিওঅ্যান্ডইএ অন্তর্ভুক্তকরণ, সংসদ সচিবালয়ের বিভিন্ন বিভাগে ১১টি নতুন পদ সৃষ্টিসহ পদোন্নতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়া সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা, ১৯৯৪ সংশোধন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি এবং সংসদীয় কমিটির সভাপতিদের কার্যালয়ে ২১ ইঞ্চি বক্স টেলিভিশনের পরিবর্তে ৪০ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন সরবরাহ অনুমোদন, সংসদ সচিবালয়ের সমন্বয় সভা এবং অধিবেশন প্রস্তুতিমূলক সভায় সরবরাহকৃত নাস্তার জনপ্রতি বরাদ্দ ও সংখ্যা বৃদ্ধি, সংসদ ভবনের নিরাপত্তা বৃদ্ধি, মেরামতসহ সংসদ ভবনের সার্বিক উন্নয়নের জন্য সুপারিশ করে কমিটি।
সংসদ সচিবালয়ের অর্গানোগ্রাম সুবিন্যস্ত করা হয়েছে জানিয়ে স্পিকার শিরীন শারমিন বলেন, ‘প্রতিবছর কমিশন বৈঠকে অ্যাডহক-ভিত্তিতে পদ সৃষ্টির প্রস্তাব আনা হয়। এভাবে অ্যাডহকভিত্তিতে না করে সুনির্দিষ্ট করে প্রস্তাব আনার জন্য বলা হয়েছিল। সেই হিসেবে এবার প্রস্তাব আনা হয়।’
তিনি বলেন, ‘সেখানে কিছু শাখা বাড়ানোর প্রস্তাব ছিল। কমিশন সেগুলোর অনুমোদন দিয়েছে। ১৩৭টি পদ বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে। কমিশন কর্মকর্তা পর্যায়ে পদ বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। নিচের দিকে কিছু পদের ব্যাপারে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সব মিলিয়ে ৫০ থেকে ৫৬টির মতো পদ বাড়বে।’