ষাটোর্ধদের পেনশন শেখ হাসিনার নিজস্ব চিন্তার ফসল: তথ্যমন্ত্রী
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ষাটোর্ধদের জন্য পেনশন স্কিম প্রধানমন্ত্রীর একান্তই নিজস্ব চিন্তার ফসল। বাংলাদেশকে তিনি সামাজিক কল্যাণকর রাষ্ট্রে রূপান্তর করতে চান। বিএনপি বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দল কখনো এটি দাবি করেনি, সুশীল সমাজ বা যারা রাত বারোটার পর টেলিভিশনের পর্দা গরম করেন কিংবা সময়ে-অসময়ে, কারণে-অকারণে জাতিকে জ্ঞান দেওয়ার চেষ্টা করেন তারাও বলেননি।
শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এ বিষয়ে আরো বলেন, সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের মাধ্যমে বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, স্বামী পরিত্যক্তাভাতাসহ তিন কোটি মানুষ নানাভাবে ভাতা পাচ্ছে। ষাটোর্ধ সবাই যাতে পেনশনের আওতায় আসে, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী দ্রুত একটি আইন প্রণয়নের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। বিদেশে কর্মরত আমাদের নাগরিকরাও এর আওতায় আসবেন।
অর্থবিভাগ সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী তার নির্বাচনী ইশতেহারের ‘সার্বজনীন পেনশন’ অঙ্গীকারের ভিত্তিতে অর্থবিভাগ প্রণীত কৌশলপত্রটি অর্থমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রীকে সাথে নিয়ে পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন।
বিএনপিনেতাদের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি তাদের নয়াপল্টনের অফিসে বারো বছর আগে থেকে সরকারের বিদায় ঘণ্টা বাজাচ্ছে। আরো কয় বছর বাজাতে হয় সেটা জনগণ ঠিক করবে। তারা বিদায় ঘণ্টা বাজানো সত্ত্বেও জনগণ গত দুই নির্বাচনে আমাদেরকে নির্বাচিত করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছেন।’
‘উনারা (বিএনপি) স্বপ্ন দেখেন ষড়যন্ত্রের, কোনো জায়গা থেকে খালেদা জিয়ার জন্য একটা চিঠি এলে, কাউকে ধরে একটা বিবৃতি আদায় করতে পারলে উনারা পুলকিত হন’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে দেশে যে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে, আগামী নির্বাচনেও জনগণ আবারো নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেবেন।’
নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে সার্চ কমিটির সুপারিশকৃত ১০ জনের নাম প্রকাশের জন্য বেসরকারি সংস্থা ‘সুজনে’র দাবির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘সুজন এরা কারা? ‘সুজন’ ব্যক্তিবিশেষ নিয়ে একটি এনজিও, সারাদেশে যার শাখাও নাই, প্রশাখাও নাই। বিভিন্ন সংস্থা থেকে তহবিল সংগ্রহ করে এটি চলে, এমনকি নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকেও তারা একসময় তহবিল নিয়েছিল, যা নিয়ে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রশ্ন রেখেছেন। সার্চ কমিটি যে দশজন সিলেক্ট করবে, আইন বলে এটি তাদের ক্ষমতা। সেটি প্রকাশ করবে কি করবে না, তা একান্ত সার্চ কমিটির ব্যাপার। সেটির জন্য সুজন বলার কে? সুজন কি নির্বাচন করে? নির্বাচনের ক্ষেত্রে সুজন কি এখানে স্টেকহোল্ডার? তা তো নয়। যারা নির্বাচন করেন তারাই স্টেক হোল্ডার। সুজনের এত দাদাগিরি কেন সেটিই আমার বড় প্রশ্ন। আর সুজনে’র পরামর্শ গণমাধ্যমেও কেন ফলাও করে প্রকাশ করা হয় -সেটিও আমার প্রশ্ন?’
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, যে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে এবং অংশগ্রহণমূলকভাবে এবার নির্বাচন কমিশন গঠন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, সেটি অভাবনীয়। ৭৫ বছরের পুরোনো গণতন্ত্রের দেশ ভারতসহ কয়েকশ’ বছরের পুরনো গণতন্ত্রের দেশেও এভাবে করা হয় না।
চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন মতবিনিময়ে উপস্থিত ছিলেন।
এস/এ