নৌকা বিরোধী সন্ত্রাসী চাঁদাবাজিসহ অন্যের জমি দখলকারীদের দিয়ে সেচ্ছাসেবক লীগের প্রেস রিলিজ কমিটি

নৌকা বিরোধী সন্ত্রাসী চাঁদাবাজিসহ অন্যের জমি দখলকারীদের দিয়ে সেচ্ছাসেবক লীগের প্রেস রিলিজ কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক: নৌকা বিরোধী, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং চাঁদাবাজিসহ অন্যের জমি দখলকারী মামলার অভিযুক্তদের দিয়ে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। গত ১৪ নভেম্বর সেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ এবং সাধারন সম্পাদক এ,কে,এম আফজালুর রমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আবদুল মান্নান মোল্লা সভাপতি ও মোঃ সাদ্দাম হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে দেবীদ্বার উপজেলার ১০ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনই সদ্য অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচেনে নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। একই সঙ্গে দুজনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। নৌকা বিরোধীদের পুরস্কুত করায় এলাকায় চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ বলেন, তথ্য গোপন করে মুলত আমাদেরকে ‘মিসগাইড’ করে উপজেলা কমিটি নেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি, আমরা বিষয়টি নিয়ে বসবো, কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর কাছে জানতে চাওয়া হলে বিস্ময়ের সুরে বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে! খোজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

সেচ্ছাসেবক লীগ’ কুমিল্লা (উঃ) জেলা কমিটির সদস্য সচিব ও মুরাদনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ড. আহসানুল আলম কিশোর সেল ফোনে জানান, এখন কমিটি নির্বাচনে আমরা যাচাই বাছাই করেই করে থাকি। বিএনপি, জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ ও নৌকা মার্কার বিরোধী মুক্ত কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত রয়েছে। উপজেলা কমিটি নির্বাচনে জেলা নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা সাপেক্ষেই কমিটি অনুমোদন দেন। অথচ তথ্যগোপন করে অতি দ্রুততার সাথে একটি মহল কেন্দ্রীয় কমিটিকে ভুল বুঝিয়ে অনুমোদন নিয়ে নিয়ে আসে।

স্থানীয়রা বলছেন, নতুন কমিটির সভাপতি আব্দুল মান্নান মোল্লা এবং সাধারন সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন সহ এ কমিটির অধিকাংশ নেতা-কর্মী গত উপজেলা পরিষদ’র উপ-নির্বাচনে নৌকার বিরোধীতা করে ধানের শীষ প্রতীকের কাজ করেছেন। মান্নান মোল্লার ভোট কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে পরাজিত করে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী করেছে। মান্নান মোল্লার নিজ কেন্দ্র গুনাইঘর (উঃ) প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা প্রতীক পেয়েছে ৪৯ ভোট এবং ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ১২৫৭ ভোট, একই ভাবে সাদ্দাম হোসেন তার দেবীদ্বার সদরের দুই কেন্দ্রে নৌকা পেয়েছে ৪৯৯ এবং ধানের শীষ ১৩২২ ভোট। মূলত পুরা কমিটিই বিএনপি সমর্থকদের দিয়ে করা হয়েছে। যা সকলের নিকট প্রশ্নবিদ্ধ। তদন্ত সাপেক্ষে উক্ত কমিটি বিলুপ্ত করে, বঙ্গবন্ধুর আদশের্ গড়া সাচ্চা মুজিব সৈনিকদের দিয়ে কমিটি গঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতি জোর আবেদন জানাচ্ছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা আওয়ামী লীগেরে এক দায়িত্বশীল নেতা বলেন, ‘নৌকা বিরোধীদের পুরস্কুত করায় আমরা লজ্জিত ও বিস্মিত। বঙ্গবন্ধুর আর্দশ বিরোধীদের দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতে গড়া সংগঠন সেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃত্ব হতে পারে না। আর কোন ধরনের সম্মেলন ছাড়াই প্রেস রিলিজ কমিটি আমাদের কাছে কাম্য নয়।’

সেচ্ছাসেবক লীগ’ দেবীদ্বার উপজেলার সদ্য বিদায়ী আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, নতুন কমিটি গঠনের বিষয় আমি কেন, আমাদের অনেকেই অবগত ছিলাম না। যখন জানতে পেরেছি, তখন জেলা এবং কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের সাথে কথা বলেছি। ওনারা বলেছেন, এ কমিটি নিয়ে যেহেতু বিতর্ক দেখা দিয়েছে, আপাতত; সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দুই দিন অপেক্ষা করতে বলেছেন। ওরা সে নির্দেশনা না মেনে ইতোমধ্যে আনন্দ মিছিল করেছে।

পদ প্রত্যাশী একাধিক নেতা অভিযোগ করেন, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নাফিউল করিম নাফার মাধ্যমে অথনৈতিক সুবিধা নিয়ে এ কমিটি অনুমোদন করা হয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নাফা দাবি করেন, ‘শুনেছি কমিটি হয়েছে, কিন্তু এর বাইরে কিছুই জানি না।’

এস/এ