নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে নুর হোসেন হত্যা রহস্য উদ্ঘাটন করতে হবে: জিএম কাদের

নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে নুর হোসেন হত্যা রহস্য উদ্ঘাটন করতে হবে: জিএম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে নুর হোসেন হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে হবে। তিনি বলেন, কেন নুর হোসেন হত্যার পোষ্ট মর্টেম রিপোর্ট প্রকাশ হলো না? আজ দেশের মানুষ জানতে চায়, কেন নুর হোসেন হত্যায় মামলা হলো না? ১৯৯১ সালের পর সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ-এর নামে অসংখ্য মামলা হয়েছে কিন্তু নুর হোসেন হত্যার মামলা হলো না কেন? তিনি বলেন, এখন মনে হচ্ছে জাতীয় পার্টির দুর্নাম করতেই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নুর হোসেনকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি প্রয়াত নুর হোসেন-এর বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলেন, নুর হোসেন বুকে ও পিঠে যে শ্লোগান লিখেছিলেন আজ আমরাও সেই শ্লোগান দিচ্ছি। আজ আমরাও বলছি, স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক। আমরা নুর হোসেন হত্যার বিচার চাই।

আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।

এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, সরকার দেশের মানুষের কষ্ট বোঝেনা বলেই অযৌক্তিকভাবে তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আবার পরিবহন সেক্টরের সাথে নাটকের মাধ্যমে ধর্মঘট ডেকে সড়ক ও নৌপথের ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে। ভাড়া যা বাড়িয়েছে তার প্রায় দ্বিগুন ভাড়া আদায় করছে গণপবিরহণে। কিন্তু দেখার কেউ নেই। অসহনীয় কষ্টে আছে দেশের মানুষ। তেলের দাম বাড়ার সাথে প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়ে যাবে, মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, বিশ^বাজারে তেলের দাম প্রতিদিনই ওঠানামা করে। কিন্তু তেলের দাম কমলে তখন তো দেশে তেলের দাম কমানো হয়না। করোনাকালে অনেক কমদামে তেল কিনে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যবসা করেছে সরকার। কিন্তু এখন ভতুর্কি দিয়ে হলেও তেলের দাম কমাতে হবে। তিনি উল্লেখ করে বলেন, বিশ^ বাজারে তেলের দাম বাড়লেও জাতীয় পার্টির আমলে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কখনোই তেলের দাম বাড়াতেন না। তিনি সব সময় ভতুর্কি দিয়ে তেলের দাম মানুষের সামনে সহনীয় পর্যায়ে রেখেছেন। বর্তমান বাস্তবতায় তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে গণবিরোধী সিদ্ধান্ত।

গণতন্ত্র দিবসের আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, ১৯৮৬ সালের ১০ নভেম্বর সামরিক আইন তুলে দিয়ে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গণতন্ত্রের দ্বার উন্মোচন করেছেন। ১৯৯১ পরে দুটি দল গণতন্ত্রের নামে জনসাধারণের সাথে প্রতারণা করেছে। তারা গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা করেনি। গণতন্ত্রের কথা বলে জনগনের সাথে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো আওয়ামী লীগ ও বিএনপি তা তারা রক্ষা করেনি। তিনি বলেন, করোনাকালে প্রমাণ হয়েছে আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা কতটা নাজুক। পর্যাপ্ত টেষ্টের ব্যবস্থাও ছিলো না। তিনি বলেন যে, সবজি কৃষক ৫ থেকে ৭ টাকা দরে বিক্রি করে, তা রাজধানীতে ৭০ থেকে ১০০টাকা দরে বিক্রি হয়। ঘাটে ঘাটে চাঁদাবাজী আর সিন্ডিকেটের কারণে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাচ্ছে। চাঁদাবাজ আর দলবাজের দৌরাত্বে দেশের মানুষ হয়রানীর শিকার হচ্ছে।

এসময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই। দেশের মানুষকে গণতন্ত্রের প্রকৃত স্বাদ ফিরিয়ে দিতেই জাতীয় পার্টির রাজনীতি। তিনি বলেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার পর থেকে যিনি দলের প্রধান, তিনিই প্রধান নির্বাহী, সংবিধানের ৭০ ধারার কারণে নিজ দলের সংসদ সদস্যরা সরকারের পক্ষে ভোট দিতে বাধ্য। আবার ১১৬ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে বিচার বিভাগ প্রচ্ছন্নভাবে সরকারের অধিনে। অন্যদিকে সংবিধান অনুযায়ী আইন না করার কারণে নির্বাচন কমিশনও গঠন হয় রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী দেশে গণতন্ত্র চর্চা চলেনা, বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়। আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করবো। আগামী নির্বাচনে তিনশো আসনে মনোনয়ন দিতে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর আদর্শ ও স্বপ্ন নিয়ে সাধারন মানুষের কাছে যাবো। দেশের মানুষ জাতীয় পার্টির দিকে তাকিয়ে আছে।
এসময় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি বলেছেন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর পরই পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করেছেন। তিনি বলেন, গণমানুষের ভলোবাসা নিয়ে আগামী দিনে জাতীয় পার্টি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে।

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি বলেছেন, দেশের মানুষ জাতীয় পার্টির শাসনামল ফিরে পেতে চায়। দেশের মানুষকে মুক্তি দিতে জাতীয় পার্টির রাজনীতি।
গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে বক্তব্য রাখেন, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, এডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, এডভোকেট মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, নাজমা আখতার এমপি, উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য রওশন আরা মান্নান এমপি, সেলিম উদ্দিন, হেনা খান পন্নি, ভাইসচেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ওমর, এইচ এম আসিফ শাহরিয়ার। উপস্থিত ছিলেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু, উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য শেরিফা কাদের এমপি, ড. নুরুল আজহার শামীম, মনিরুল ইসলাম মিলন, ড. গোলাম মোস্তফা, আমানত হোসেন আমানত, লেঃ কঃ (অব.) সাব্বির আহমেদ।

টেনিস কোচ হিয়া জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়েছেন

টেনিস ফেডারেশন এর খেলোয়াড় এবং টেনিস এলিট ১৬ এর কোচ সৈয়দা জাকিয়া আফরোজ হিয়া জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়েছেন। আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানী কার্যালয়ে পার্টি চেয়ারম্যান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এর হাতে ফুল দিয়ে অনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন তিনি।

এস/এ