ষড়যন্ত্রকারীদের জন্য মানুষ পরিবর্তন চায় কি না সেটিই প্রশ্ন : তথ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘যারা ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করে, তাদের জন্য মানুষ পরিবর্তন চায় কি না সেটিই প্রশ্ন’ বলেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার দুপুরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। বিএফইউজে’র সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ, কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল, সহ-সভাপতি মধুসূদন মন্ডল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ মামুনুর রশীদ, দপ্তর সম্পাদক সেবিকা রাণী, সদস্য উম্মুল ওয়ারা সুইটি, ড. উৎপল কুমার সরকার, শেখ নাজমুল হক ও নুরে জান্নাত সীমা সভায় অংশ নেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বক্তব্য ‘আগামী নির্বাচনে পরিবর্তন আসবে’ এর জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মহাসমুদ্রে আশাই একমাত্র ভরসা, এটি বিএনপি’র ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এই আশা নিয়েই উনারা বেঁচে আছেন। আশা থাকা ভালো, সবাই তো চিরকাল ক্ষমতায় থাকবে না। কিন্তু সেই পরিবর্তন বিএনপি’র জন্য মানুষ চায় কি না, এটি হচ্ছে প্রশ্ন। উন্নয়ন অগ্রগতি বাদ দিয়ে যারা মানুষের ওপর পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে কিম্বা নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে মানুষকে জিম্মি করার, হত্যা-ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করে, তাদের জন্য মানুষ পরিবর্তন চায় কি না সেটিই প্রশ্ন।’
এসময় সাংবাদিকরা ‘রোজিনা ইসলাম একটি সংস্থা থেকে পুরস্কার পেয়েছেন, একইসাথে সরকারি নথি চুরির অভিযোগে তিনি বিচারাধীন’ এ বিষয়ে মন্তব্য চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পুরস্কার পাওয়ায় তাকে অভিনন্দন, নেদারল্যান্ডের একটি প্রতিষ্ঠান তাকে পুরস্কৃত করেছে এবং পাকিস্তানের একজন সাংবাদিকদের হাত থেকে তার স্বামী পুরস্কার গ্রহণ করেছে। বাকি বিষয়টা বিচারাধীন বিধায় এবিষয়ে কিছু বলা সমীচীন নয়।’
এর আগে বিএফইউজে নেতৃবৃন্দের সাথে সভায় মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএফইউজে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন। তারা যেভাবে সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠান করেছে তা গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার একটি উদাহরণ। এজন্য বিএফইউজে, নবনির্বাচিত কমিটি এবং নির্বাচনের অনুষ্ঠানের সাথে যুক্ত সবাইকে অভিনন্দন।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৩ বছরে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিস্তৃতির পাশাপাশি সাংবাদিকদের সংখ্যাও বেড়েছে, নানাধরণের সমস্যাও দেখা দিয়েছে। গণমাধ্যমের সমস্যাগুলোকে সবসময় নিজের সমস্যা মনে করে আমার শক্তি, সামর্থ্য, ক্ষমতার মধ্যে যতদূর সম্ভব সমাধান করার চেষ্টা করে এসেছি। উপমহাদেশে বা অন্যদেশে করোনাকালে আমাদের দেশের মতো সাংবাদিকদের সহায়তা করা হয়নি। দেশে ক্লিনফিড বাস্তবায়নের কথা বহু বছর ধরে বলা হয়েছে, কিন্তু হয়নি। এখন ক্লিনফিড বাস্তবায়িত হয়েছে, দেশের সব টেলিভিশন চ্যানেল উপকৃত হচ্ছে। এসময় টেলিভিশন থেকে কোনো চাকুরিচ্যুতি মোটেই বাঞ্ছনীয় নয়। করোনা চলে যাওয়ায় ব্যবসা বাণিজ্যের মতো গণমাধ্যমেও সংকট অনেকটাই কেটে গেছে। করোনাকালে যাদের চাকুরি গেছে, তারা আবার চাকুরিতে পুণর্বহাল হবেন বলে আমরা আশা করি।’
এসময় গণমাধ্যমকর্মী আইন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং সম্প্রচার আইন নিয়েও কাজ চলছে, জানান ড. হাছান। সাংবাদিকদের সুরক্ষা বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে সব গণমাধ্যমকর্মীর জন্য বীমার ব্যবস্থা করলে তাদের সুরক্ষা হয়। ওয়েজবোর্ডেও এটি বলা আছে। আমি সবাইকে অনুরোধ জানাবো দায়িত্বশীলভাবে এটি করার জন্য। একজন সাংবাদিক অনেক বছর চাকুরি করার পর শূন্য হাতে চলে যাবে, এটা হওয়া উচিত নয়।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এদিন জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে দলীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে এবং বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের সকল শহীদ ও ৩ নভেম্বর কারাগারে নিহত জাতীয় নেতৃবৃন্দের সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও দোয়ায় এবং পরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের আলোচনা সভায় অংশ নেন।
এস/এ