সাম্প্রদায়িক হামলা চালিয়ে সংঘবদ্ধচক্র রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে: নানক
নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, বিএনপি-জামায়াতের সংঘবদ্ধচক্র মানুষকে বিভাজন করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তাদের সেই নীলনকশা কখনোই সফল হবে না।
সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস: রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক দলের ভূমিকা গোলটেবিল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভার আয়োজন করে।
তিনি বলেন,আজ যে অশুভ শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, ধর্মীয় সহাবস্থানকে নষ্ট করছে তাদের সমূলে উৎপাটন জরুরি হয়ে উঠেছে।ধর্মীয় বিষয়ে গুজব ছড়িয়ে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা আমাদের মতো অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের জন্য উদ্বেগজনক ঘটনা। বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ঘটনার পর পরই অবিলম্বে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বলেই সহিংসতাকারীরা চিহ্নিত হচ্ছে এবং তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে ।
সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয় এমন কোনো কর্মকান্ড দেশরত্ন শেখ হাসিনার সরকার বরদাস্ত করবে না জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সকলকে আগমনী বার্তা দিয়েছেন। সম্প্রীতি রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের বিকল্প নেই।সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এই ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ হতে হবে বাংলার মুজিব আদর্শের উত্তরাধিকারদের দ্বারা; তাহলে বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যে জাতি-ধর্ম-বর্ণ সম্মিলিতভাবে বেঁচে থাকার প্রয়াস সফল ও সার্থক হয়ে উঠবে।
আওয়ামী লীগের এই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের যে অভয়ারণ্য গড়বার পায়তারা করছে দেশের জামায়াত বিএনপি ও তাদের সাগরেদ মৌলবাদী তাবেদার অপশক্তি, তাদের বিষদাঁত ভেঙে দিয়ে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের আলপথ রচনায় আমাদের সঞ্জীবিত হতে হবে। ধর্ম বনাম রাষ্ট্র বলে লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসকে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিতে হবে।
নানক বলেন, ভারত বিভক্তির ২৪ বছর পর দ্বিজাতি তত্ত্বকে ভুল প্রমাণ করে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করে জন্ম হয় সেক্যুলার স্বাধীন বাংলাদেশের। অত্যন্ত আধুনিক, প্রগতিশীল, সাম্য, সমতা, সকলের জন্য ন্যায়বিচার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার রাষ্ট্রদর্শন নিয়ে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ যার নায়ক ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পঁচাত্তরে স্বপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়েই শুরু হয় বাংলাদেশের উল্টো পথে যাত্রা।কিন্তু সে যাত্রায় ইস্পাত-দৃঢ় হয়ে বাধ সাধেন বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা
জাহাঙ্গীর কবির নানক আরো বলেন,
্পঁচাত্তরের পর অভ্যুত্থান পাল্টা অভ্যুত্থানে যখন বাংলার গণতন্ত্রের পতাকা অবনমিত ছিল তখন বাংলাদেশের সংবিধানকে কাঁটাছেড়া করে এদেশের মানুষের সাংবিধানিক স্বাধীনতা হরণ করেছিল খুনি মোশতাক জিয়া গং রা। এদেশের সভ্যতাকে তাদের উত্তরসূরিরা আবারও বর্বরতার মুখাপেক্ষী করতে চায়।তাদের বিরুদ্ধে নৈতিক যুদ্ধের সাইরেন আমাদের দোরগোড়ায় বেজে চলেছে। তাদের শক্ত হাতে দমণ করেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ বিনির্মাণের আলপথ রচনা করতে হবে। আজ সেই মোশতাক জিয়া গং দের সাগরেদরাই বাংলাদেশের মানুষের উৎসবের স্বাধীনতাকে হরণ করছে। এদেরকে প্রতিরোধে মানবিক মানুষ, পরমত সহিষ্ণু মানুষ, স্বদেশ ও সংস্কৃতি-চেতনায় উদ্ভাসিত মানুষ তৈরি করা খুব জরুরি। না হলে যে পঙ্গপাল সৃষ্টি হবে তারা সোনার ফসল সব ধ্বংস করে দেবে।
জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া , জাসদ নেত্রী শিরিন আক্তার ,তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।
এস/এ