মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশে ক্যাপ্টেন তাজ ছাত্রনেতা থেকে শেখ হাসিনা এখন বিশ্বনেতা
নিজস্ব প্রতিবেদক: দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত্র স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ছাত্রনেত্রী থেকে জননেত্রী। মেধা মনন, সততা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা, গতিশীল নেতৃত্ব, মানবিক মূল্যবোধ দিয়ে শুধু দেশেই নন, বহির্বিশ্বেও তিনি অন্যতম সেরা রাষ্ট্রনায়ক। অর্থাৎ নিজে কর্মগুনে শেখ হাসিনা আজকে বিশ্বনেত্রীতে পরিনত হয়েছেন। শুধু বাংলাদেশ নয় তিনি বিশ্ব নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য।
আজ সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল নির্বাচন প্রস্তুত কমিটি আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে র্যালী ও সমাবেশ এবং আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। পরে কেক কেটে জন্মদিনের সূচনা করা হয়। শেখ হাসিনা দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে দোয়া করা হয়। এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল বাহার মজুমদার টিপুর নেতৃত্বে প্রেসক্লাব পল্টন এলাকায় আনন্দ মিছিল করেন সংগঠনের নেতারা।
সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী তাজ বলেন, ২৮ সেপ্টেম্বর বাঙালির জীবনে বিশেষ তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য সম্পন্ন। কারণ এই দিন বাঙালির গণতন্ত্র ও উন্নয়ন পাখি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার জন্মদিন। তার জন্মের আবাহন বাঙালির জন্য বিশেষ প্রেরণার এবং সর্বময় শক্তির। কারণ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারের হত্যার পর জনগণের আকাক্সক্ষার যত বাস্তবায়ন তা তার একক নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতিতে যেখানে বিশ্বের বৃহৎ ও প্রতিষ্ঠিত অর্থনৈতিক শক্তিগুলো ম্রিয়মাণ সেখানেও বাংলাদেশ উজ্জ্বল, দীপ্ত পথযাত্রায় নান্দনিক ভাস্কর। বিশ্ব অর্থনীতিতে এগিয়ে চলা পাঁচটি দেশের মাঝে একটি। বর্তমান অবস্থানে যা বিশ্বের ৪১তম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ। শুধু তা-ই নয়, মাথাপিছু আয়ও উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। ১২ বছর পূর্বে যেখানে দেশে মাথাপিছু আয় ছিল ৫০০ থেকে ৭০০-এর ঘরে সেখানে এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২২২৭ ডলার।
আওয়ামী লীগের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বলেন, রাজনীতি ও রাজনীতির নানা বিষয়কে শেখ হাসিনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলার ক্ষেত্রে পিতা শেখ মুজিবের প্রত্যক্ষ ভুমিকা ছিলো না। কিন্তু প্রচ্ছন্নভাবে তাঁর কন্যার চোখে স্বাধীনতা ও সক্রিয়তাবাদের একটা আদর্শ হিসেবে নিজেকে দাঁড় করিয়ে ছিলেন। সেকারণেই শেখ হাসিনা তাঁর সাধারণ প্রবণতায় নিজেকে রূপান্তরিত করতেন স্বাধীনতা সংগ্রামের কর্মী হিসেবে। তাঁকে দেখা যেতো রাজপথের সাহসী মিছিলে পিতার মুক্তির দাবিতে।
ক্যাপ্টেন তাজুল ইসলাম বলেন, আজ শেখ হাসিনার ৭৫ তম জন্মদিন। তাঁর জন্মদিনে নেপোলিয়ন কথাগুলো মনে পড়ছে। পৃথিবীর গ্রেটদের তালিকায় তাঁর পিতা বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক অনবদ্য চরিত্র। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে যেখানটাতে থামিয়ে দেয়া হয়েছে – সেখান থেকেই শেখ হাসিনা শুরু করেছেন। বহুমাত্রিক প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন গত চার দশকের রাজনীতিতে। নিজেকে পৌঁছে দিয়েছেন অনন্য সাধারণ এক উচ্চতায়। ক্ষমতা, যশ ও খ্যাতির চূড়ায় অবতীর্ণ তিনি। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত এক যুগে বদলে গেছে বাংলাদেশ। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, নিজস্ব অর্থায়নে ৪৫০টি মডেল মসজিদ, সোয়া লাখ গৃহহীন-ভূমিহীন মানুষকে ঘর প্রদান, মেট্রোরেল নির্মাণের মতো মেগা প্রকল্পের পাশাপাশি শতভাগ বিদ্যুতায়ন, প্রতিটি মানুষের কাছে ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে দেওয়া, শক্ত অর্থনীতি তৈরি করা, শতভাগ শিক্ষার হার অর্জন, দারিদ্র্য নির্মূল, করোনা সংকট মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। জীবন ও জীবিকা সচল রাখতে চালকের আসনে সঠিক নেতৃত্ব দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
সংগঠনের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল হাইয়ের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, বীর মুক্তিযোদ্ধা শরিফ উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন পাহারী বীর প্রতীক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাসার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফরিদ উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাজাহান, আমরা মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম নয়ন, তহিদুল ইসলাম তুষার প্রমুখ।
এস/এ