শেখ হাসিনার মানেই বাংলাদেশের উন্নয়নের জয়জয়কার

শেখ হাসিনার মানেই বাংলাদেশের উন্নয়নের জয়জয়কার

গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু

বিশ্ব রাজনীতির কবি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা, রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাজারো প্রচেষ্টা, ত্যাগ তিতিক্ষার পর দেশের রাজনীতিতে একজন সফল প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের সাহসী এবং অগ্রগতিশীল উন্নয়ন কৌশল গ্রহণের ফলে সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কাঠামোগত রূপান্তর ও সামাজিক অগ্রগতির মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে রোল মডেল হিসেবে বিশ্বে নেতৃত্বে দিচ্ছে। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু দেশের রত্ন নয়, তিনি বিশ্বরত্ন। তিনি বাঙালি জাতির চেতনার প্রতীক। আমাদের অহংকার। যার অপ্রতিরোধ্য পথ চলায় বাংলাদেশ আজ ছুটে চলছে উন্নয়নের মহাসড়কে। শেখ হাসিনা মানেই উন্নয়নের জয়জয়কার। বাংলাদেশের আস্থার প্রতীক।আমাদের সকলের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ৩৭টির অধিক পুরস্কার ও পদক অর্জন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ক্রাউন জুয়েল’ বা ‘মুকুট মণি’ আখ্যায়িত করেছে আর্থ ইনস্টিটিউট, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, গ্লোবাল মাস্টার্স অব ডেভেলপমেন্ট প্র্যাকটিস এবং ইউএন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সল্যুশনস নেটওয়ার্ক। আন্তর্জাতিক অ্যাকাডেমিক কমিউনিটি শেখ হাসিনার অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম এবং ভারতের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন, সাহিত্য, লিবারেল আর্টস এবং মানবিক বিষয়ে ৯টি সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করেছে। ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ (এমডিজি) অর্জনে বিশেষ করে শিশু মৃত্যুর হার হ্রাসে অবদানের জন্য জাতিসংঘের অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। ২০১৫ সালে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে আইসিটি’র ব্যবহারে প্রচারণার জন্য শেখ হাসিনাকে ‘আইসিটি সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়। দেশের উন্নয়নে তার অব্যাহত অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে এ পদক প্রদান করা হয়। উইমেন ইন পার্লামেন্ট (ডব্লিউআইপি) ও ইউনেস্কো বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীকে ‘ডব্লিউআইপি গ্লোবাল ফোরাম অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করে। এছাড়া পার্ল এস বাক অ্যাওয়ার্ড (১৯৯৯) সিইআরইএস পদক, মাদার তেরেসা পদক, এমকে গান্ধী পদক, ইন্দিরা গান্ধী শান্তি পুরস্কার (২০০৯), ইন্দিরা গান্ধী স্বর্ণ পদক, হেড অব স্টেট পদক, গ্লোবাল ডাইভারসিটি অ্যাওয়ার্ড (২০১১, ২০১২) ও নেতাজী স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯৭) পেয়েছেন শেখ হাসিনা।

শুধু পুরস্কারপ্রাপ্তিতেই নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফলতার কথা এখন বিশ্বনেতারা জানতে চান বিভিন্ন ফোরামে। বহুপক্ষীয় সম্মেলনগুলোতে শেখ হাসিনা উপস্থিত হলেই অন্যান্য রাষ্ট্রনায়ক ও সরকারপ্রধান কাছে এসে অভিনন্দন জানান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এমন পরিচিতি বাংলাদেশের আর কোনো নেতা পাননি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন ক্ষমতায় থাকা বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি নারীনেত্রী। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, ব্রিটেনের মার্গারেট থ্যাচার, জার্মানির অ্যাঙ্গেলা মের্কেল এবং শ্রীলঙ্কার চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গাকেও টপকে গেছেন শেখ হাসিনা। উইকিলিকসের সর্বশেষ গবেষণা মতে, শেখ হাসিনা বর্তমান বিশ্বের পুনরুত্থান করা সবচেয়ে আইকনিক নেত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা তৃতীয় ও চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদী গঙ্গা নদীর পানি চুক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি, যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ এবং খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। তিনি কৃষকদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচি এবং ভূমিহীন-দুস্থ মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি চালু করেন। এর মধ্যে দুস্থ মহিলা ও বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বয়স্কদের জন্য শান্তি নিবাস, আশ্রয়হীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প চালু করেন। জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডের পর তৈরি কুখ্যাত ইনডেমনিটি আইন বাতিল করে করেন বিচার ব্যবস্থা পূর্ণগঠন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কার্যক্রম শুরু, রাজনৈতিক হত্যা, বঙ্গবন্ধু ও তার সপরিবার, কারাগারে জাতীয় চার নেতা হত্যাসহ সকল হত্যার বিচার কার্যক্রম শুরু করেন।

২০০১ সালের পহেলা অক্টোবর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পরাজয়ের পর বিরোধী দলে অবস্থানকালে আওয়ামী লীগকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন ও নেতৃত্বশূন্য করতে বেশ কয়েকবার মরণ আঘাত চালায় ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত জোট। এরপর ২০০৮ সালে ফের আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর একুশ শতকে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো শপথ নেন। তারপর বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা ১৩, ২৬০ মেগাওয়াটে উন্নীতকরণ, গড়ে ৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন, ৫ কোটি মানুষকে মধ্যবিত্তে উন্নীতকরণ, ভারত ও মায়ানমারের সঙ্গে সামুদ্রিক জলসীমা বিরোধের নিষ্পত্তি, প্রতিটি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন, মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, কৃষকদের জন্য কৃষিকার্ড এবং ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলা, বিনা জামানতে বর্গাচাষীদের ঋণ প্রদান, চিকিৎসাসেবার জন্য সারাদেশে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন, দারিদ্র্যের হার ২০০৬ সালের ৩৮.৪ থেকে ২০১৩-১৪ সালে ২৪.৩ শতাংশে হ্রাস করেন।

এস/এ