ঈশ্বরগঞ্জে টিসিবি’র অবস্থা, ‘কাজীর গরু কাগজ ও কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই’

টিসিবি

ঈশ্বরগঞ্জে টিসিবি’র অবস্থা, ‘কাজীর গরু কাগজ ও কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই’

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে দ্রব্য মুল্য বৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষের মাঝে টিসিবি পন্যের ব্যাপক চাহিদা থাকার পরও ডিলারদের মালামাল উত্তোলন বিতরণে কর্যক্রমে নেই। ৫জন ডিলারের নাম তালিকায় থাকলেও মালামাল বিতরণে মাঠে নেই কেউ।

জানা যায়, করোনাকালীন সময়ে লকডাউনে নিন্ম আয়ের সাধারণ মানুষ চরম সঙ্কটে পড়েছে দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধির কারণে। সারাদেশে ন্যায্য মূল্যে টিসিবি’র মালামাল বিক্রি হলেও ঈশ্বরগঞ্জে এর কোন কার্যক্রম নেই। কাগজে কলমে তালিকায় ডিলার ও তদারকি কর্মকর্তার নাম থাকার পরও কে মালামাল তুলেন, কে বিক্রি করেন, কোথায় বিক্রি করেন কেউ তা বলতে পারেন না।

১০ থেকে ১৫ বছর পূর্বে বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতা ও কর্মকর্তাদের যোগসাজসে এবং তদবিরের মাধ্যমে ডিলার হয়েছেন অনেকেই। কিন্তু ডিলারশীপ ঠিক রাখার জন্য কাগজে পত্রে মাল উত্তোলন হলেও সাধারণ মানুষ তা পাচ্ছে না।

রিক্সা, ভ্যান চালক, দিনমজুরদের সাথে কথা হলে তারা অনেকেই হতাশা প্রকাশ করে বলেন, রমজান মাসে টিসিবি’র পন্য দেওয়ার বিষয়টি প্রতি বছরেই শুনি। কিন্তু গিয়ে আর পাওয়া যায় না। এছাড়া কখনো টিসিবি’র মাল দেওয়া হয়েছে বলে তাদের জানা নেই।

টিসিবি’র তালিকায় নাম থাকা আলভি এন্টারপ্রাইজের প্রো: মাজহারুল এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ডিলারের তালিকায় নাম থাকলেও আমি তা চালাই না। মালামাল উত্তোলন বা বিতরণের বিষয়টি আমি বলতে পাবো না। তবে আমার ভাই হাবিবুল্লাহ মিলন তা পরিচালনা করেন। হাবিবুল্লাহ মিলন জানান, ঈদের পূর্বে মাল বিতরণ করা হয়ে ছিলো।

রাকিব এন্টারপ্রাইজের রুহুল আমিনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, টিসিবি’র লাইন্সেস জমা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিছুদিন যাবৎ মালামাল উত্তোলন করাও হয় না।

মেসার্স শামছুল আলম এর প্রো: শামছুল আলম জানান, রোজার মাসে মালামাল উত্তোলন ও বিতরণ করা হলেও পরে নির্বাহী অফিসারের চাহিদা টিসিবিকে না জানানোর কারণে মাল উত্তোলন করা হয়নি।

মেসার্স দৌলত এন্টারপ্রাইজের মোজাম্মেল হক ও মেসার্স মজিবুর রহমান জানান আগস্ট মাসের শুরুতে পন্য উত্তোলন ও বিতরণ করা হয়েছে। এতে তদারকি কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন বলে তারা জানান।

ঈশ্বরগঞ্জ পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছাত্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দরিদ্র লোকজনের জন্য সরকার টিসিবি’র মাধ্যমে ন্যায্যমূলে পন্য ক্রয়ের সুবিধা দিলেও ঈশ্বরগঞ্জ এর কোন কার্যক্রম নেই। কে কখন কাকে টিসিবি’র ও অন্যান্য ডিলার দিয়েছে তার কোন কিছুই পৌরসভাকে অবহিত করা হয় না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন জানান, ডিলার নিয়োগ হয়েছে দীর্ঘদিন পূর্বে। বর্তমানে শহর এলাকায় প্রতি মাসেই ডিলারদের দায়িত্বে টিসিবি’র পন্য উত্তোলন করে বিতরণ করা হয়। এখানে চাহিদা পত্রে কোন বিষয় নেই, সঠিক বিতরনের লক্ষে তদারকি কর্মকর্তা নিয়োগ ও বিতরণ হয়েছে মর্মে একটি প্রত্যয়ন প্রদান করা হয়।
এস/এ