কোনো ষড়যন্ত্রই শেখ হাসিনার পথ রুদ্ধ করতে পারেনি: আবদুস সোবহান গোলাপ
নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ বলেছেন- আজ ১৬ জুলাই। ২০০৭ সালের এই দিনে জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় দিয়ে গ্রেফতার করেছিলেন ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দিন সরকার। তারা সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যাকে দীর্ঘ ১১ মাস অন্ধকার কারাগারে ফেলে রেখেছিলেন।
কিন্তু দেশের মানুষের তীব্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা মুক্তি পায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের আয়োজনে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্টে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের আয়োজিত শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ছত্রছায়ায় ও হাওয়া ভবনের সরাসরি নির্দেশনায় গ্রেনেট হামলা করা হয়েছিল। গ্রেনেট আঘাতে আওয়ামী লীগের ২২ নেতাকর্মী মৃত্যুবরণ করে ও পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীরা আহত হন। তাদের অনেকের হাত নেই, অনেকের পা নেই।
তারা অনেক কষ্টে দিনযাপন করছেন। সেই গ্রেনেড হামলায় প্রাণে বেচে যান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা। কিন্তু তার শ্রবন শক্তি মারাত্বক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা বিদেশে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। ঠিক সেই মুহুর্তে ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দিন সরকার জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা, মার্ডার ও দুর্নীতির মিথ্যা মামলা দেন। শুধু মামলাই নয়, বঙ্গবন্ধুকন্যার দেশে আশার পথ বন্ধ করে দেন।
কিন্তু তারা শেখ হাসিনার দেশে আসার পথ বন্ধ করতে পারেনি। কারণ শেখ হাসিনা সেদিন বলেছিলেন- আমি যদি অন্যায় ও অপরাধ করে থাকি, আমার যদি ফাঁসির হুকুমও হয় তা আমি আইনি মোকাবিলা করতে চাই। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি, আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি, বাংলার মানুষকে ভালোবাসি, আমার বাংলাদেশে ফেরা কেউ বন্ধ করতে পারবে না।
আমি অবশ্যই বাংলাদেশে যাবো। ড. আবদুস সোবহান গোলাপ আরও বলেন, সেদিন শত বাঁধা উপেক্ষা করে বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। কিন্তু ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দিন সরকারের মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘ ১১ মাস অন্ধকার কারাগারে ছিলেন তিনি।
করোনা মহামারির শুরু থেকে সরকার ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে দাড়িয়েছে উল্লেখ্য করে তিনি আরও বলেন- করোনার ভাইরাসের কারণে অসহায়, দরিদ্র ও মেহনতি মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি নগদ অর্থ ও ত্রাণ সামগ্রী মানুষের ঘরে ঘরে পৌছে দিচ্ছেন।
শেখ হাসিনা চান বাংলাদেশে কোনো গরীব থাকবে না, ভূমিহীন থাকবে না, দরিদ্র থাকবে না, কোনো গৃহহীন থাকবে না, কোনো ঠিকানাহীন থাকবে না এবং একটি লোকও করোনার কারণে না খেয়ে মারা যাবে না। আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন- পৃথিবীতে এমন একটি দেশও নেই- যেখানে ভূমি ও গৃহহীনদের ঘর দেয়া হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছেন।
করোনা কালীন সময়ে তার সঠিক ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহন ও বাস্তবায়নে বাংলাদেশের মানুষ এখনো অনেক ভালো আছেন। শুধু সরকার নয়, তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে ২ কোটি মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। শ্রমজীবী ও অসহায় মানুষের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ করেছে। আওয়ামী লীগ সব সময় মানুষের পাশে থাকবে। আওয়ামী মৎস্যবীজী লীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে আছে- থাকবে।
দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, দেশে অনেক রাজনৈতিক দল আছে, তারা দেশের যে কোনো সংকটে মানুষের পাশে থাকে না।
তারা শুধু সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেন, সমালোচনা করেন। বাস্তবে মানুষের পাশে থাকে না। সংকটে মানুষের পাশে থাকে শুধু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন- সারাবিশ্বের করোনা ভয়াভহ রুপ ধারন করেছে। সারাবিশ্বেই প্রতিদিন সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন ও বাস্তবায়নের কারণে বাংলাদেশ আজ অনেক ভালো আছে।
আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যেই আমরা এই সংকট থেকে মুক্তি পাবো। দেশের সব মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্বের কারণে তিনি দেশ-বিদেশে পরিচিতি। বিশ্বের অনেক দেশের সাথে তার সু-সম্পর্ক রয়েছে। সে কারণে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন আগেই পেয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমান সাঈদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক লায়ন শেখ আজগর নস্করের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবির, আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সহ-সভাপতি আবুল বাসার, গফুর চোকদার, গিয়াস খান, মুহাম্মদ আলম, মামতাজ খানম, সাজ্জাদ আলম লিকু সিকদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম, রফিকুল ইসলাম খান, ফিরোজ তালুকদার, প্রচার সম্পাদক কাজী শফিউল আলম সফিক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক তাইফুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক সাজেদুর রহমান কমল, সাংগঠনিক সম্পাদক রসুল সিদ্দিকী রিপন, হাবিবুর রহমান, নাজমুল হক, উপ-প্রচার সম্পাদক ইউসুফ আলী বাচ্চু, উপ-দফতর গোলাম সাব্বির সহ ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণের নেতাকর্মীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন ।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মৎস্যজীবী লীগের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান হাওলাদার এর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ও সদস্য সচিব কাজী মহিদুল ইসলাম মহিমের তত্বাবধনে পাঁচ শতাধিক পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
এস/এ